বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
তৃণমূল কংগ্রেস তৈরির পরেই কালনার বেগপুর পঞ্চায়েত এলাকার রাজখাঁড়া গ্রামের বাসিন্দা ইনসান মল্লিক যুব নেতা হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও মানুষের সঙ্গে মেশার দক্ষতার জেরে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বলে পরিবারের দাবি। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বেগপুর পঞ্চায়েত দখলে আসে। ইনসান সাহেবের স্ত্রী শিউলি মল্লিক পঞ্চায়েতের প্রধান হন। কয়েকমাস আগে লোকসভা নির্বাচনে সব পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে বিজেপি থাবা বসাতে পারলেও এই পঞ্চায়েতে প্রায় ১০ হাজার ভোটে জেতে শাসক দল।
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইনসান সাহেব কালনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। তাঁর এই উত্থান দলের বেশকিছু কর্মীর কাছে ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছিল বলে পরিবারের দাবি। মাস আটেক আগে নিজর গ্রামে রাতের অন্ধকারে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। অল্পের জন্য সেবার প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সারাদিন পঞ্চায়েত সমিতির কাজ সেরে বিকেলে বাড়ি ফেরেন ইনসান সাহেব। সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হন। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নারায়ণপুর এলাকায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাছে দু’জন দুষ্কৃতী বাইকে চেপে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর দু’রাউন্ড গুলি চালায়। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে একটি বাড়ির ভিতর দিয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেন। এলাকারই বাসিন্দা বাবলু মণ্ডল ছুটে এসে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি পড়ে আছেন। দ্রুত তাঁকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কলকাতায় রেফার করা হয়। তাঁর কোমরের নীচে দুটি গুলি লাগে। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় হুগলির পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ইনসান মল্লিকের স্ত্রী শিউলি মল্লিক বলেন, স্বামীর খুনের ঘটনায় আমি সিআইডি তদন্ত চাই। দোষীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
নিহতের ভাই রাজীব মল্লিক অবশ্য ঘটনার পিছনে দলের একাংশের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। দাদা আমজাদ মল্লিক বলেন, ভাই মানুষের ও দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করব।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ইনসান বড় সংগঠক ছিল। ওর দলের অপূরণীয় ক্ষতি হল। ইনসানকে সরাতে পারলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লাভ হবে। আমাদের মনে হয়, তারাই এই কাজটি করেছে। পুলিসকে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলেছি।
সিপিএম নেতা সুকুল শিকদার বলেন, আমরা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। বিজেপি জেলা সহ সভাপতি ধনঞ্জয় হালদার বলেন, সব মৃত্যুই দুঃখের। শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।