বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রবিবার সন্ধ্যায় কুলটি থানার আকওয়ান বাগান মাঝি পাড়ার কাছে কুয়ো খাদান অর্থাৎ ‘র্যা ট হোলে’ ঢুকে আর বের হতে পারেননি গ্রামের তিন বাসিন্দা। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিস ও ইসিএলের মাইনস রেসকিউ টিম ক্যাম্প করে উদ্ধার কার্য চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গর্তের মুখ অত্যন্ত সংকীর্ণ থাকায় এবং গর্তে মারাত্মক রকমের অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় ঢুকতে পারেননি উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। এরপর সোমবারও দিনভর উদ্ধার কাজ চলতে থাকে। কিন্তু, তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হতাশা বাড়তে থাকে গ্রামে। সোমবারের পর উদ্ধার কাজে কার্যত হাত গুটিয়ে নেয় পুলিস-প্রশাসন থেকে ইসিএল কর্তৃপক্ষও। প্রশাসনের এই উদাসীনতা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। বুধবার তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলার ও পরে বিধায়কের বাড়ি গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিধায়ক। তিনি ঘটনাস্থলে থেকেই বিভিন্ন আধিকারিকদের ফোন করে উদ্ধারকাজ জোর কদমে চালানোর জন্য দরবার করেন। অবশেষে রাজ্য প্রশাসন এনডিআরএফের সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবার রাতেই কলকাতা থেকে আসানসোলে এসে পৌঁছয় ৪০ সদস্যের একটি টিম। ভোরেই ঘটনাস্থলে আসেন ওই টিমের আধিকারিকরা। তবে, এই ধরনের সুড়ঙ্গ খননে পরিকল্পনা বা নকশা না থাকায় প্রাথমিক সমস্যা দেখা যায়। তাই সঠিকভাবে কেউই এই সুড়ঙ্গের গতিপথ বলতে পারেননি। এরপরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে কম পক্ষে পাঁচটি নকশা বানান টিমের সদস্যরা। এরপরই তাঁরা একটি নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে বিকল্প একটি সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু করে। যে কুয়ো খাদানে নিখোঁজ তিনজন ঢুকেছিলেন, তার বেশ কয়েক ফুট দূরেই ঝোপ পরিষ্কার করে গাছ কেটে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। খনন কাজের পাশেই পুকুর রয়েছে। এমনকী এই এলাকায় এক সময়ে খাদান থাকায় খুব সাবধানে খনন শুরু করা হয়, যাতে বড় কোনও অংশ ধস না নামে বা জল ঢুকে না যায়। উদ্ধারকারী দলের দাবি, কমপক্ষে ২৫ ফুটের একটি আড়াআড়ি গর্ত খনন করার পর পাশাপাশি সুড়ঙ্গ খনন শুরু হবে। যার মাধ্যমে ওই সুড়ঙ্গে পৌঁছনোর চেষ্টা হবে। এয়ার ভেন্টিলেশন যন্ত্র দিয়ে সেখানকার গ্যাস বের করে সেলফ কন্টেনিং ব্রিদিং অপারেটর সহ নানা সামগ্রী নিয়ে ভিতরে ঢুকবেন উদ্ধারকারী দলের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা। ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধারকাজের উপর নজর রেখেছিলেন জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিকও। এদিন উদ্ধার কাজ দেখতে আসেন বিধায়ক। বুধবার মা মারা যাওয়া সত্ত্বেও ঘটনাস্থলে আসেন কাউন্সিলার নেপালবাবু।
এনডিআরএফের ডেপুটি কমানডান্ট অভয়কুমার সিং বলেন, আমরা চেষ্টা করছি নিরাপদে যত দ্রুত উদ্ধারকাজ শেষ করা যায়। কিন্তু এলাকার কোনও নির্দিষ্ট নকশা না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
যদিও এই ঘটনা এলাকার অবৈধ কয়লা পাচারের ঘটনাকে প্রকাশ্যে এনেছে। এমনকী এই ঘটনার পরেও এনিয়ে তেমনভাবে সক্রিয়তা দেখা যায়নি কারও। যা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ওইসব অবৈধ খাদান থেকে কয়লা চুরিতে অবিলম্বে রাশ টানতে উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেও দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। এলাকায় বাড়তি নজরদারি চালানোর ব্যাপারেও তাঁরা সরব হয়েছেন।