উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ এবং ইসলামপুর থানার মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভৈরব নদী। পূর্ব পাড়ে রয়েছে ডোমকল মহকুমার ইসলামপুর থানার পাহাড়পুর, চাতরা, গরাইপুর, মহেশ্বরপুর, মহানন্দপুর, রৌশননগর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। পূর্ব পাড়ে রয়েছে লালবাগ মহকুমার মুর্শিদাবাদ থানার তেঁতুলিয়া, ধরমপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। ২০০০সালের আগে নদীর দুই পাড়ের গ্রামের বাসিন্দাদের যাতাযাতের জন্য কোনও রাস্তা ছিল না। চাষের জমি বা জমির আলের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হতো। চাষের জমির উপর দিয়ে যাতায়াত নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষও হয়। বোমা-গুলিও চলেছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। রাস্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংঘর্ষ এড়াতে ২০১২সালে দুই পাড়ের বাসিন্দারা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নইমুদ্দিন সাহেবের দ্বারস্থ হন। রাস্তার সমস্যা মেটাতে নিজের ৩বিঘা জমি দানের পাশাপাশি আরও ৩বিঘা জমি কেনেন ওই প্রধান শিক্ষক। এই ৬বিঘা জায়গায় মাটির রাস্তা তৈরি হয়। কিন্তু বর্ষাকালে মাটির রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়ার ফলে যাতাযাতের অসুবিধার পাশাপাশি জমি থেকে ফসল বাড়িতে নিয়ে আসতে অসুবিধায় পড়তে হতো দুই পাড়ের গ্রামবাসীদের। কিছুদিন আগে রানিনগর-১ ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে পশ্চিম পাড়ে ৭কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা হয়। কিন্তু পূর্বপাড়ে অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের ডাঙাপাড়া এবং তেঁতুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঢালাই না হওয়ায় যাতায়াত এবং ফসল বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতো। পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, ধরমপুরে রাস্তা না হওয়ায় পূর্বপাড়ের পাহাড়পুর, চাতরা গরাইপুর সহ ১০-১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের প্রায় ৭কিলোমিটার রাস্তা বেশি ঘুরে চুনাখালি হয়ে লালবাগে আসতে হতো। এই রাস্তা হওয়ার ফলে গ্রামবাসীরা নদী পেরিয়ে ধরমপুর হয়ে লালবাগে পৌঁছতে পারবেন। ফলে সময় এবং রাস্তা কমবে। পাশাপাশি পশ্চিমপাড়ের তেঁতুলিয়া এবং ডাঙাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দারা বর্ষাকালে নদীর চর এলাকার জমি থেকে ফসল ঘরে তুলতে অসুবিধায় পড়তেন। রাস্তা ঢলাই হয়ে গেলে অসুবিধা থাকবে না। ধরমপুরের বাসিন্দা বিকাশ সরকার বলেন, প্রধান শিক্ষকের এই উদ্যোগের ফলে দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হল।
নইমুদ্দিন সাহেব বলেন, এই পাড়ের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দুই পাড়ের গ্রামের বাসিন্দারা অসুবিধার কথা জেনে রাস্তা ঢালাই করে দেব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি মতো রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছি। এদিকে রাস্তা ঢালাই হলেও নদী পারাপারের জন্য নদীর উপর বাঁশের সাঁকোই ভরসা দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। বর্ষাকালে এই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। বর্ষার দু’মাস গ্রামবাসীদের প্রায় ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়। নইমুদ্দিন সাহেব বলেন, গ্রামের মানুষের জন্য নদীর উপর সেতু তৈরির জন্যও আগামীদিনে উদ্যোগ নেব। পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোস্তাফা সরকার বলেন, নদীর উপর সেতু না থাকার কারণে খুব অসুবিধায় পড়তে হয়। এই বিষয়টি নতুন সংসদ সদস্য আবু তাহের খান সাহেবকে জানাব।