উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের প্রথমে তমলুক হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস এপ্রিল মাসে হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশু সহ মোট তিন শিশুকে উদ্ধার করে। এরপর হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশুকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকি দুই শিশুকে নিমতৌড়ির হোমে রাখা হয়। কয়েক মাস আগে অপর শিশুকে এক দম্পতি দত্তক নিলেও তিথি হোমেই থেকে গিয়েছিল।
প্রশাসন ও হোম কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে তিথিকে এই রাজ্য ও দেশের আট দম্পতি দেখেও পছন্দ না করে ফিরে যান। কারণ, সকলেই আরও ছোট শিশু নিতে চাইছিলেন। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি’ বা কারা সহ অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন হোমে থাকা শিশুদের ছবি ওয়েবসাইটে দেখেন ইতালির এক দম্পতি। এরপর তাঁরা নিমতৌড়ির হোমে থাকা তিথিকে পছন্দ করেন। এরপর তিথিকে পাওয়ার জন্য দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেন এই দম্পতি। সমস্ত নিয়ম ও আইনি ধাপ পেরিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিচারকের অনুমোদন সাপেক্ষে তিথিকে দত্তক পান ওই দম্পতি। এরপর তিথির নামে পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরির পর মঙ্গলবার নিমতৌড়িতে পৌঁছান ৩৩বছর বয়সি ওই দম্পতি।
এরপর এদিন দুপুরে নিমতৌড়ির হোমে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের পর্ব চুকিয়ে তিথিকে নিয়ে দমদম এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা দেন ইতালিয়ান দম্পতি। এদিন সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে বিমানে শিশুকন্যাকে নিয়ে তাঁরা ইতালি পাড়ি দেন। এদিনের অনুষ্ঠানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান দিলীপ দাস, কমিটির সদস্য রত্নেশ্বরী পট্টনায়ক, জেলা শিশু সুরক্ষা হউনিটের কর্মী কৃষ্ণা বল, সমাজকর্মী তথা প্রাক্তন বিধায়ক বহ্মময় নন্দ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। তিথির বর্তমান বাবা ইতালির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং মা সমাজকর্মী। এদিন ছোট্ট কন্যাকে বুঁকে আঁকড়ে ধরার পর দম্পতির চোখ জলে ভেসে যায়। ভাঙা ইংরেজিতে তাঁরা বলেন, আমাদের শূন্যজীবনে আলো আনল এই ছোট্ট মেয়েটি। আমরা একে মনের মতো করে গড়ে তুলব।
হোমের সম্পাদক যোগেশ সামন্ত বলেন, সবাই তিথিকে খুব ভালোবাসত। মেয়ের মতো করে গত তিন বছরে ওকে পড়াশুনা, নাচ গান, হাতের কাজ শেখানো হয়েছে। তাই ওকে ছাড়তে সকলের চোখে জল আসছে। তবুও ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে সকলেই খুব আনন্দিত। ভগবানের কাছে আমাদের একটাই প্রার্থনা, ও যেখানে থাকুক খুব ভালো থাকুক।