উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
লোকসভা ভোটের পর মঙ্গলবার সাড়ে ১১টা নাগাদ বোর্ড মিটিং ছিল। মিটিংয়ে ১৫জন অংশ নেন। কিছুক্ষণ পর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা ১৯নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অমর রাম সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ আরও দুই কাউন্সিলার মিটিং হলে ঢোকেন। বৈঠকে ঢুকে অমর রাম চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এজেন্ডার কপি চান। চেয়ারম্যান জানান, চারদিন আগে মিটিংয়ের চিঠি ইস্যু করার সময় সেই কপি বিলি করা হয়েছে। এরপর অমর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলার শ্যামল ঠাকুর সুর চড়িয়ে চেয়ারম্যানকে মিটিং হলে জোরে বলতে বলেন। তা নাহলে মিটিং বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এনিয়ে কথা কথাকাটি চলাকালীন আচমকা অমর রাম ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলার চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে একটি কাচের গ্লাস ছুঁড়ে মারেন বলে অভিযোগ। সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিনি আরেকটি গ্লাস ছুঁড়ে মারলে সেটি সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় ও সুফল রাজোয়ার নামে দুই কাউন্সিলারের হাতে লাগে। তাঁদের হাত কেটে যায়। এনিয়ে পুরসভার ভিতরে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। মিটিং হল থেকে বেরিয়ে অমর রাম ও তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলার কিছুক্ষণ চেয়ারম্যানের ঘরের সামনে ধর্ণায় বসেন। পুরসভার ভিতরে হাঙ্গামার খবর দ্রুত পৌঁছয় দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের কাছে। তিনি গোটা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন।
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল মণ্ডল ৮৯হাজার ৩১১ভোটে জিতলেও কাটোয়া বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ১৮৫৯ভোটে পিছিয়ে। একইভাবে কাটোয়া পুরসভা থেকেও বিজেপি ৮৭০৫ভোটের লিড নিয়েছে। ২০আসন বিশিষ্ট কাটোয়া পুরসভায় ১৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে পড়েছে। ২নম্বর ওয়ার্ডে ৭২২, ৩নম্বরে ১২৮২, ৪নম্বরে ১১৪৫, ৫নম্বরে ৫৪২, ৬নম্বরে ৬০৮, ৭নম্বরে ৭৭৫, ১০নম্বরে ১২৩৫, ১১নম্বর ওয়ার্ডে ১৭৮৫, ১২নম্বরে ৯৬০, ১৪নম্বরে ১১৫৭, ১৬নম্বরে ৯৯, ১৭নম্বরে ৪৫৫, ১৮নম্বরে ৪৯৩ এবং ২০নম্বর ওয়ার্ডে ১২১৯ভোটে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রাক্তন চেয়ারম্যান অমর রাম বলেন, মঙ্গলবার পুরসভার বোর্ড মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ে আমরা যাই। আমার সঙ্গে থাকা এক কাউন্সিলার চেয়ারম্যানকে জোরে অ্যাজেন্ডা পড়তে বলেন। তখন চেয়ারম্যান পাল্টা জানান, জোরে বলতে পারবেন না। এনিয়ে বচসা বাধতেই পুলিস মিটিং হলের ভিতর ঢুকে পড়ে। আমরা এনিয়ে আপত্তি তুলি। রবীন্দ্রনাথবাবু চেয়ারম্যান হওয়ার পর ৩১জন পুরকর্মীকে বসিয়ে দিয়েছেন। ওইসব পরিবারের সদস্যরা এখন দারুন কষ্টে আছেন। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন যেসকল এস্টিমেট পাশ করানো হয়েছিল সেগুলি এখনও কাজ হয়নি। আমার ওয়ার্ডে ‘সবার জন্য গৃহ’ প্রকল্পে উপভোক্তা বাছাই করছেন চেয়ারম্যান নিজেই। ওই প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। চেয়ারম্যান কখনওই আমার মতামত নেন না। আমার ১৯নম্বর ওয়ার্ড থেকে সর্বোচ্চ ১০০১ভোটের লিড পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ চেয়ারম্যানের ৬নম্বর ওয়ার্ডে দল পিছিয়ে। পুরসভা এবং কাটোয়া বিধানসভায় দল পিছিয়ে পড়েছে। এর নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে চেয়্যারম্যানের সরে দাঁড়ানো উচিত ছিল।
কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অমর রাম সহ তিন কাউন্সিলার শীঘ্রই বিজেপিতে যোগ দেবেন। সেজন্য ওরা পুরসভায় ঢুকে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। এদিন ওরা আমাকে লক্ষ্য করে গ্লাস ছুঁড়ে মারছিল। দু’জন কাউন্সিলারের হাতে গ্লাস লেগে যাওয়ায় আমার গায়ে লাগেনি। দীর্ঘদিন ধরে ওরা বোর্ড মিটিংয়ে হাজির হননি। বিশৃঙ্খলা করার জন্যই ওরা এসেছিলেন। কারণ, তাড়াতাড়ি বিজেপিতে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন।