উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
এই জেলায় এবার শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট মিটেছে। নানুর বিধানসভা থেকে আশানুরূপ না হলেও প্রায় ১৭হাজার ভোটের লিড পেয়েছে তৃণমূল। ভোটের আগে তৃণমূলের বিবদমান গোষ্ঠীর লোকজন মনোমালিন্য ভুলে এক ছাতার তলায় এলেও ভোটপর্ব মিটতেই আবারও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নানুর। এদিন সকাল পর্যন্ত দান্যপাড়া গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। এদিন সকালেও গ্রামের রাস্তায় বোমার সুতলি পড়ে ছিল। হাওয়ায় তখনও বারুদের গন্ধ ছিল। গ্রামবাসীদের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহিম শেখ ও আলো শেখের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। ওই এলাকায় বালির ঘাটের রাশ কার হাতে থাকবে ও পঞ্চায়েতে কাজের বেশিরভাগ অংশ কার দখলে থাকবে তা নিয়েই বিবাদ ছিল। যার জেরে গ্রামে একে অপরকে লক্ষ্য করে কয়েকশো বোমা ফাটানো হয়। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনেছে। আলো শেখের পরিবার ও তার অনুগামীরা দাবি করেছে, মহিম শেখ ইদানীং বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরা আগে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন। অন্যদিকে, মহিম শেখের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, গ্রামে বিরোধী বলে কিছু নেই। তাঁরা সকলেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূল দল করেন। কিন্তু তাঁদের মারধর করে এলাকাছাড়া করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠী। এদিনের ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। এদিন সকাল থেকে গ্রামে রুটমার্চ করে পুলিস। বোমাবাজির ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে গ্রামেরই চারজনকে আটক করেছে নানুর থানার পুলিস।
উল্লেখ্য, দান্যপাড়ার ২৮৭নম্বর বুথে তৃণমূল ৬৭০টি ও সিপিএম ৮৫টি ভোট পেয়েছে। এই একটি বুথ থেকে তৃণমূল ৫৮৫টি ভোটের লিড পেয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলো শেখের স্ত্রী সামিনা বিবি বলেন, সোমবার সন্ধ্যার নামাজের পর আচমকা গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। মহিম শেখ ও তার অনুগামীরা ব্যাপক বোমা ফাটাতে থাকে গ্রামের চারিদিকে। আমাদের বাড়িতে এসে ভাঙচুর চালায়। ওরা আগে তৃণমূল করত, এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তাই আমাদের গ্রামে থাকতে দেবে না।
অপর তৃণমূল নেতা মহিম শেখের স্ত্রী সেরিনা পারভিন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু অনেকেই এখন অন্য দল ছেড়ে তৃণমূলে আসছে। তারা চাইছে পুরনো তৃণমূল কর্মীরা সরে যাক। তাই আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। পুলিস এসে যাকে পারছে তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সেই ভয়ে বাড়ির পুরুষরা থাকতে পারছে না। আমরা সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।
যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা অভিজিৎ সিংহ। এদিন তিনি সিউড়িতে একদিকে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও নানুর অঞ্চলের নেতা কেরিম খান ও অন্যদিকে নানুর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, দান্যপাড়ার ঘটনা সম্পূর্ণভাবে দু’টি পরিবারের মধ্যে বিবাদকে কেন্দ্র করে। এদিন বোমাবাজির ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। নানুর এলাকায় তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও নেই।