উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
পূর্ব বর্ধমান সহ বিভিন্ন জায়গায় সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা বিজেপি-র জার্সি চাপিয়ে এবং ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে পার্টি অফিস ভাঙচুর কিংবা বেদখল করার অভিযোগ উঠলেও মঙ্গলকোটের ক্ষেত্রে ছবিটা ভিন্ন। ২০১৬সালে বিধানসভা ভোটে মঙ্গলকোট থেকে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নির্বাচিত হওয়ার কয়েক মাস পর বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেয়। মূলত বিধায়ক তথা মন্ত্রী অনুগামীদের সঙ্গে সংঘাত লাগে স্থানীয় ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর ঘনিষ্ঠদের। অপূর্ববাবু দলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের ‘কাছের লোক’ বলে পরিচিত। এবার লোকসভা ভোটে নিজের বিধানসভা এলাকায় প্রচারের অনুমতি পাননি সিদ্দিকুল্লা সাহেব। বিধায়ক অনুগামীদের একটা অংশ লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর গেরুয়া পতাকা নিয়ে দাপাদাপি করছেন বলে অভিযোগ। ভাটপাড়া গ্রামে তৃণমূলত্যাগী বিক্ষুব্ধরাই বিজেপির পতাকা ধরেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র পতাকা লাগাচ্ছেন। আর এনিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়েছে।
মঙ্গলকোটে ব্লক সভাপতি অনুগামীরা এ-টিম এবং বিধায়ক অনুগামীরা বি-টিম হিসেবে পরিচিত। গত দু’-তিন বছর ধরে বি-টিম কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কিন্তু, বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধিতে আচমকা বি-টিমের একাংশ ময়দানে নেমে গেরুয়া পতাকা টাঙানো শুরু করে দেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা রাজ্য কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের একটা অংশ আমাদের পতাকা এলাকায় টাঙাচ্ছিল। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে বোমাবাজি হয়েছে। বেশকিছু বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে। আমাদের দু’টো পতাকা পোড়ানো হয়েছে। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। গোটা বিষয়টি পুলিসকে জানানো হয়েছে। সাধারণ মানুষজন নিগৃহীত হয়েছেন। বহু মানুষ ঘরছাড়া। আমরা চাই, পুলিস দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নিক।
মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক মুন্সি রেজাউল হক বলেন, রবিবার প্রথম আমাদের দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর একটা অংশ এবং এক সময় সিপিএম করা লোকজন সম্মিলিতভাবে আমাদের পার্টি কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। তারপর আমাদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা পিছু হটে। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় সোমবার মঙ্গলকোট-শিমুলিয়া চটি রাস্তার ধারে পুলিস ক্যাম্প বসে। পুলিসের সহযোগিতায় ঘরছাড়া লোকজন ঘরে ফিরে আসে। ফের মঙ্গলবার ভোর থেকে ফের গণ্ডগোল বাধে। কিছুক্ষণ বোমাবাজি হয়েছে। তারপর পুলিস দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও বলেন, গত ২৩মে ভোটের ফল প্রকাশের পর মঙ্গলকোটের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে। চানকে ব্লক সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চক্রবর্তী সহ অনেকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার নিগনে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এব্যাপারে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বোলপুর লোকসভার মধ্যেই পড়ে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম এবং আউশগ্রাম বিধানসভা। মঙ্গলকোট বিধানসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মাল ১লক্ষ ৫৩৯৭ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপি-র রামপ্রসাদ দাস পেয়েছেন ৭৬হাজার ১৭০ভোট। কেতুগ্রাম থেকেও তৃণমূল কংগ্রেস ১লক্ষ ২৬৭৯ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছে ৭৫১৬৫ভোট। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মঙ্গলকোট বিধানসভায় বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধি হতেই বিভিন্ন জায়গায় গোলমাল হয়েছে। এখানে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীরাই বিজেপি-র পতাকা নিয়ে হামলা জড়িয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিজেপি-র জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী পুলিস সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু ঘটনা ঘটছে। সেইসব ঘটনা বিজেপি-র নীতি আদর্শের সঙ্গে মানানসই নয়। এধরনের ঘটনা রুখতে পুলিস যথাযথ ব্যবস্থা নিক।