ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
তৃণমূলের মালদহ জেলার সহসভাপতি দুলাল সরকার বলেন, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই আমাদের ভিত মজবুত। তাই এবার ভোটেও আমরাই সাফল্য পাব।
রাজ্যের নজরকাড়া কেন্দ্রগুলির মধ্যে মালদহ দক্ষিণ অন্যতম। সংখ্যালঘু প্রধান এই কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের কব্জায়। এই কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এবিএ গণিখান চৌধুরীর স্মৃতি। গঙ্গা ও মহানন্দা নদী বেষ্টিত এখানকার অধিকাংশ এলাকা কৃষি নির্ভর। এখানকার অর্থকরী ফল আম। কিছু এলাকায় লিচুও ফলে। পাশাপাশি, গ্রামীণ মহিলাদের একাংশ বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এই তল্লাটে ক্রমাগত শক্তি বাড়িয়েছে তৃণমূল। গত লোকসভা, বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট।
প্রবল মোদি হাওয়ার মধ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র দখলে রাখে কংগ্রেস। সেবার এখানে মোট ভোট পড়ে ১২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯৭৭টি। এর মধ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৭০টি। যা প্রদত্ত ভোটের ৩৪.৭০ শতাংশ। ওই ভোটে এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে জোরদার লড়াই করে দ্বিতীয় হয় বিজেপি। তাদের প্রাপ্ত ভোট ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮টি। যা প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ৩৪.০৬ শতাংশ। সেবার তৃণমূল পায় ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৫৩টি ভোট। যা প্রদত্ত ভোটের ২৭.৪৪ শতাংশ।
ওই ভোটে কংগ্রেস মোথাবাড়িতে ৪২.৪৮, সুজাপুরে ৫১.১৪, ফরাক্কায় ৪৩.৬১ এবং সামসেরগঞ্জে ৪১.৫২ শতাংশ ভোট পায়। এই চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে তারা এগিয়ে ছিল। বাকি তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়ে তারা। যার মধ্যে ইংলিশবাজারে ১৭.৪১, মানিকচকে ২৭.৪৬ এবং বৈষ্ণবনগরে ২৬.৬৮ শতাংশ ভোট পায়। সংশ্লিষ্ট তিনটি কেন্দ্রে লিড পায় বিজেপি। তারা ইংলিশবাজারে ৬১.৫২, মানিকচকে ৪৩.২৬, বৈষ্ণবনগরে ৪১.৫৭ শতাংশ ভোট পায়। এর বাইরে তারা মোথাবাড়িতে ২৯.৭৯, সুজাপুরে ১০.৫৭, ফরাক্কায় ২৬.৮৬ এবং সামসেরগঞ্জে ১৬.৫২ শতাংশ ভোট পায়। আর তৃণমূল ইংলিশবাজারে ১৭.৮১, মানিকচকে ২৫.২৭, মোথাবাড়িতে ২৫.৪৪, সুজাপুরে ৩৫.০৯, বৈষ্ণবনগরে ২৮.১৩, ফরাক্কায় ২৫.৫১ এবং সামসেরগঞ্জে ৩৭.০১শতাংশ ভোট পায়।
এর দু’বছরের মাথায় একুশের বিধানসভা ভোটে পাশা বদল। ইংলিশবাজার বাদ দিয়ে ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্র দখল করে তৃণমূল। সেগুলির মধ্যে কংগ্রেসের একসময়ের ঘাঁটি সুজাপুরে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের হার সর্বাধিক, ৭৩.৪৪ শতাংশ। এর বাইরে শাসকদল মানিকচকে ৫৯.৬৩, মোথাবাড়িতে ৫৯.৭০, সুজাপুরে ৭৩.৪৪, বৈষ্ণবনগরে ৩৯.৮১, ফরাক্কায় ৫৪.৮৯ এবং সামসেরগঞ্জে ৫১.১৩ শতাংশ ভোট পায়। ইংলিশবাজার কেন্দ্রটি কব্জা করে বিজেপি। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৯.৯৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪০.৬৪ শতাংশ।
মানিকচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণননগর ও ফরাক্কায় বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল কোথাও ২৫, কোথাও ২২, আবার কোথাও ৩৮.৬২ শতাংশ। আর নিজেদের ঘাঁটি সুজাপুর ও সামসেরগঞ্জ এই দু’টি জায়গায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। এরপর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ইংলিশবাজার, কালিয়াচক-১, ২ ও ৩, মানকচক, ফরাক্কা ও সামসেরগঞ্জ সব ব্লকই দখল করে তৃণমূল।
জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, এই কেন্দ্র কংগ্রেসের দখলেই আসবে। বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা কমিটির সহসভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, এবার সব অঙ্ক ওলট-পালট করে এই কেন্দ্র বিজেপি দখল করবে।