নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রবল আর্থিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকে উজ্জ্বল জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলের ছাত্রী উষসী দাস। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫২৬। বাবা উত্তম দাস পেশায় ছোটদের পোশাকের ফেরিওয়ালা। মা গৃহ শিক্ষিকা। এরপরও নুন আনতে পান্তা ফুরানো শহর লাগোয়া ডেঙ্গুয়াঝাড় এলাকার ওই পরিবারটির সদস্য হিসেবে উষসীর ভরসা ছিল অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষিকারাই। তাইতো অনেকেই বলছেন, এভারেস্টে বিনা অক্সিজেনে পৌঁছনোর মতো সাফল্য পেয়েছে উষসী। কারণ তার কোনও প্রাইভেট টিউটর ছিল না। বাবা মায়ের কাছে পড়েই মাধ্যমিকে ৫২৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হল। তাতে শুধু অভিভাবকরা নন, ওর সাফল্যে খুশি গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা সহ তার সহপাঠীরা। 
উষসীর প্রাপ্ত নম্বর বাংলা ও ভূগোলে ৯০ করে, জীবনবিজ্ঞানে ৮৩, ইতিহাসে ৭৪, ইংরেজিতে ৬৬, অঙ্কে ৬০ এবং ভৌতবিজ্ঞান ৬৩। উষসীর স্বপ্ন আগামী দিনে শিক্ষকতা করা। বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সে। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক পরাধীনতায় তা কতটা সম্ভব, এ নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। 
শুক্রবারও ডেঙ্গুয়াঝাড় থেকে মেয়েকে সাইকেলে বসিয়ে গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলে মার্কশিট নিতে আসেন উত্তমবাবু। মেয়ের পড়াশোনার বিষয়ে বাবা উত্তম দাস বলেন, টাকার অভাবে ছোট থেকেই ওর মা ওকে বাড়িতেই গাইড করে এসেছে। এর পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষিকাদের সহযোগিতা যথেষ্টভাবে পেয়েছে। যার জন্যই ও এতদূর এগিয়েছে। আগামীতেও ও এগিয়ে যাক, সেটাই চাই। কিন্তু পড়াশোনার খরচ চালানোটাই এখন চিন্তায় রেখেছে আমাদের। এদিকে উষসীর সাফল্য নিয়ে আশাবাদী গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জনা দে ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, উষসী দাসের সাফল্য অন্যান্য ছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত।