রাজীব বর্মন, দেওয়ানহাট: হাটে হাটে পাটি ফেরি করে বিক্রি করেন বাবা। তা থেকে যা সামান্য আয় হয় তা দিয়ে কোনওরকমে চলে সংসার। পরিবারের এমন আর্থিক দূরাবস্থাকে পিছেনে ফেলে মাধ্যমিকে ৬৬৭ পেয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছে কোচবিহার-১ ব্লকের ঘেঘিরঘাটের বর্মনপাড়ার অমিতকুমার ভৌমিক। সে দেওয়ানহাট হাইস্কুলের ছাত্র। সে বাংলায় ৯৮, ইংরেজিতে ৮৪, অঙ্কে ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৪, জীবন বিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে ৯৫, ভূগোলে ১০০ নম্বর পেয়েছে। ভবিষ্যতে সে কৃষি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। খেলাধুলোর প্রতি তার তেমন টান না থাকলেও অবসর সময়ে কবিতা লেখে ও গল্পের বই পড়ে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার প্রিয় লেখক। 
অমিত বলে, আমি নির্দিষ্ট কোনও সময় ধরে নিয়ম মেনে পড়াশোনা করিনি। যখন পড়তে ইচ্ছে করত, তখন পড়েছি। প্রতিদিন গড়ে সাত-আট ঘণ্টা পড়েছি। আমার এই ভালো ফলের জন্য সমস্ত শিক্ষক ও বাবা, মার অবদান রয়েছে। তাঁরাই আমাকে সবসময় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষকদের কথামতো পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা ছিল মেধাতালিকায় থাকব। তবে না পেরে একটু খারপ লাগছে। ভবিষ্যতে কৃষি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। পরিবারে অমিতের বাবা মা ও দাদা রয়েছেন। পরিবারে আর্থিক অনটন থাকলেও অমিতেব দাদা স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্ক নিয়ে পিএইচডি করছেন। দাদার মতো সেও মেধাবী। মা অলোকা ভৌমিক বলেন, আমার দুই ছেলেই খুব মেধাবী। কিন্তু সাংসারে নিত্য অভাব। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে স্বামী। বিভিন্ন হাটে ঘুরে ঘুরে পাটি বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। তার উপর ছেলের পড়াশোনার খরচ। বড় ছেলে স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকায় পড়তে গিয়েছে। ছোট ছেলের পড়াশোনার জন্য সরকারি সহযোগিতা পেলে ভালো হতো।
অমিতকে বিজ্ঞানের বই দিচ্ছেন শিক্ষকরা। নিজস্ব চিত্র