গোপাল সূত্রধর, পতিরাম: মাধ্যমিকে অভূতপূর্ব সাফল্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার। মেধাতালিকায় প্রথম দশে এই জেলার ৭ পরীক্ষার্থী। বালুরঘাট সদর থেকেই  তালিকায় সাতজন। পড়ুয়াদের এই সাফল্যে গর্বিত জেলাবাসী। মেধাতালিকার ৭ জনের মধ্যে বালুরঘাট হাইস্কুলের চারজন ছাত্র, বালুরঘাট গার্লস হাইস্কুলের দুই ছাত্রী এবং পতিরাম থানার বাউল পরমেশ্বর হাইস্কুলের একজন ছাত্রী রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ফলপ্রকাশের পর রাজ্যে জ্বলজ্বল করছে বালুরঘাট। দিনভর সাত পরীক্ষার্থীকে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছে শিক্ষামহল। ফুল, মিষ্টি কৃতীদের বাড়িতে হাজির হন অনেকেই।  গত বছর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় মাত্র একজন স্থান পেয়েছিল। তবে এবার জেলার ৭ জন জায়গা করে নেওয়ায় খুশির হাওয়া শিক্ষা মহলে। জেলা মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নিতাইচন্দ্র দাস বলেন, মেধা তালিকায় জেলার ৭ জনের নাম উঠে এসেছে। যারা জেলার মধ্যে সেরা, সেই তালিকাও এসেছে। এবছর অভূতপূর্ব রেজাল্ট হয়েছে। সব পরীক্ষার্থীকে শুভেচ্ছা জানাই। বালুরঘাট হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক তথা বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলার বিপুলকান্তি ঘোষের মন্তব্য, বালুরঘাট শিক্ষা ও সংস্কৃতির শহর বলে পরিচিত। এই জেলার স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীরা বরাবরই মেধা তালিকায় থকে। এবার একসঙ্গে ৭ জনমেধা তালিকায় এসেছে। বালুরঘাট হাইস্কুল, গার্লস স্কুল ও বাউল পরমেশ্বর হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে। জেলাবাসী হিসেবে গর্ব হচ্ছে। শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে সকলের পাশেই থাকব। 
বালুরঘাট শহরের এক পড়ুয়ার অভিভাবক পূজা দাস বলেন, আমার ছেলে সামনের বছর মাধ্যমিক দেবে। আজকের এই রেজাল্ট দেখার পর খুব ভালো লাগছে। জেলাবাসী হিসেবে গর্ব অনুভব করছি। যারা পরের বছর মাধ্যমিক দেবে, আজকের এই ফল তাদের উত্সাহিত করবে।
এদিন সকালে ফল ঘোষণা হতেই পড়ুয়াদের বাড়িতে চাঁদের হাট বসে। জেলা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টির প্যাকেট ও ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিস এবং বালুরঘাট থানার তরফেও সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, বালুরঘাটের পড়ুয়ারা এত ভালো রেজাল্ট করেছে।  পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। মিষ্টি ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষাদপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট হাইস্কুলের চারজন মেধা তালিকায়ে এসেছে। ৬৯১ পেয়ে উদয়ন প্রসাদ রাজ্যে তৃতীয় হয়েছে। একই স্কুলের কৃশানু সাহা ৬৮৮ পেয়ে রাজ্যে ষষ্ঠ এবং ওই স্কুলেরই  সাত্বত দে ৬৮৭ পেয়ে সপ্তম হয়েছে।  রৌনক ঘোষ ৬৮৫ পেয়ে রাজ্যে নবম ও বালুরঘাট গার্লস হাইস্কুল থেকে আবৃত্তি ঘটক ও অর্পিতা ঘোষ ৬৮৭ পেয়ে সপ্তম হয়েছে। বাউল পরমেশ্বর হাইস্কুলের ছাত্রী অস্মিতা চক্রবর্তী ৬৮৫ পেয়ে নবম স্থানে রয়েছে। সূত্রের খবর, জেলার বহু স্কুলের আরও একাধিক পড়ুয়া রয়েছে, যারা অল্পের জন্য রাজ্যের প্রথম ১০ জনের মেধাতালিকায় আসতে পারেনি। সেই তালিকাও স্কুল শিক্ষা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষাদপ্তর জানিয়েছে, এবছর জেলার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৮ হাজার ৫৯৯ জন। তাদের মধ্যে ছেলে ৮ হাজার ৯৫৩ জন। ছেলেদের পাশের হার ৮৬.৩ শতাংশ। মেয়ে ৯ হাজার ৬৪৬ জন। পাশের হার ৮৬.৫৮ শতাংশ।  নিজস্ব চিত্র