গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, আমাদের জেলার কাছে এটি খুবই গর্বের বিষয়। মাদুরকাঠি উৎপাদনে জেলা প্রশাসনের তরফে হরিরামপুরের তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৯৯ টি পরিবারকে সাহায্য করা হয়েছে। প্রতি পরিবার পিছু এক লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। সেই টাকায় তারা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে মাদুরকাঠি উৎপাদনের পাশাপাশি মাদুর শিল্পেও জোর দিচ্ছে। ২০২০-২১ সালের মধ্যে ওই ব্লকের আরও ৪০০টি পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জানা গিয়েছে, মূলত দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লক মাদুরকাঠি উৎপাদন করে এই সাফল্য এনে দিয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি দিল্লিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে রুপোর পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিকদের নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি বিভিন্ন জায়গার মাদুরকাঠি উৎপাদনের পরিসংখ্যান নিয়ে আলোচনা করে ওই স্বীকৃতি দিয়েছে।
এছাড়াও ১০০ দিনের কাজে এই জেলা বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করাতে রাজ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।
অন্যদিকে মাদুর উৎপাদনকারী ইতি দেবনাথ ও ইন্দ্রানী মণ্ডল বলেন, আগে আমাদের জমিতে সাধারণ ধান, পাট চাষ করা হতো। এখন খানিকটা জমিতে ধান, পাট লাগানোর পরে প্রায় ১০ শতক জমিতে মাদুরকাঠি চাষ করছি। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে প্রথমে মাদুরকাঠি চাষে আমাদের সহায়তা করা হয়। তারপর থেকে আমরাও মাদুরকাঠি চাষেই মনোযোগ দিই। পাশাপাশি আমরা মাদুর শিল্পের কাজও করছি। এর ফলে আমরা স্বনির্ভর হতে পারছি। আমাদের এই মাদুরকাঠি চাষ আজ এত বড়ো সাফল্য এনে দিয়েছে। তাতে আমরা খুব খুশি। আগামীদিনে আরও বেশি করে উৎপাদন করব।
এবিষয়ে হরিরামপুরের বাগিচাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গুলজার আলি বলেন, আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মাদুর উৎপাদনকারীদের নানারকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই মতো চাষিরা মাদুরকাঠি চাষ করেন। মাদুর চাষের পর অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে মাদুর উৎপাদনও করেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই। এলাকার চাষিরা এখন এই চাষে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, প্রাচীন কাল থেকেই গৃহস্থালির কাজে ঐতিহ্যবাহী মাদুর শিল্পের ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে মৃতপ্রায় এই শিল্পকে পুনর্জীবিত করতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি জেলার হরিরামপুর ব্লকের বাগিচাপুর, শিরশী ও পুন্ডরি গ্রাম পঞ্চায়েতে এই মাদুরকাঠির চাষে জোর দেওয়া হয়। এখন ওই এলাকার ৯৯টি পরিবার মাদুর উৎপাদন করছে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে প্রতি পরিবারকে দশ শতক জমিতে ওই চাষে ৮২৫টি শ্রমদিবস দানের কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মাদুর বোনার জন্য তাঁতকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলাও হয়েছে। যার ফলে এখন অল্প সময়ে বেশি পরিমাণে মাদুর উৎপাদন করা যাচ্ছে। আগামীদিনে আরও ৪০০ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধু মাদুর নয়, ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রেও সাফল্য পেয়েছে এই জেলা। রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করাতে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে জেলা।