সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজবাড়ির গোয়ালটুলি মোড় থেকে হেচারি মোড় পর্যন্ত প্রায় পাঁচকিমি রাস্তা দীর্ঘআট বছর ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। শুধু ওই এলাকার রাস্তাই নয়, গোটা ব্লকের বিভিন্ন জায়গার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরে রয়েছে। বেহাল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে বাসিন্দাদের রোজ দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। ভাঙা রাস্তায় চলতে গিয়ে রাতবিরেতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, এনিয়ে বহুবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কাজ কিছুই হয়নি। প্রশাসনের দাবি, পর্যায়ক্রমে সবক’টি ভাঙা রাস্তা মেরামত করা হবে।
ফাঁসিদেওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের শাহানারা বেগম বলেন, আমাদের হাতে এতটা ফান্ড নেই যে রাস্তা বানানো সম্ভব হবে। তাই গ্রামের রাস্তাঘাট উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা মন্ত্রী গৌতম দেবকে আবেদন জানিয়েছি। শুনেছি, খুব শীঘ্রই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর থেকে রাস্তার কাজের টেন্ডার হবে। আমরা আশাবাদী, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, গ্রামের কিছু রাস্তা বেহাল হয়ে আছে। ওসব রাস্তা সমীক্ষা করে ওপর মহলে জানানো হবে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের তাপস সরকার বলেন, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-১ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। পিএমজিএসওয়াই-২ প্রকল্পে কিছু কাজের প্রস্তাবে পাঠিয়েছি। অনুমোদন এলেই আমরা কাজ শুরু করব।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের উদ্যোগে গোয়ালটুলি মোড় থেকে হেচারি মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও ব্লকের বহু রাস্তা মহকুমা পরিষদের বরাদ্দে বছর আটেক আগে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ওসব কোনও রাস্তাই নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেসব এখন ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ রাস্তাই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। ভাঙা রাস্তা থেকে পিচের প্রলেপ অনেকদিন আগেই উঠে গিয়েছে। ফলে যেখানে সেখানে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত তৈরি হয়ে আছে। বোল্ডার বেরিয়ে আসায় খানাখন্দে ঝুঁকি নিয়ে সকলকে চলতে হচ্ছে। সাইকেল, মোটর বাইক, টোটোয় চলাচল করা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। রোগীদের হাসপাতালে কষ্ট করে নিয়ে যেতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে তাঁরা বহুবার প্রশাসন সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনও পক্ষই রাস্তা সংস্কার করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সতীশ রায়, পরেশ বর্মন বলেন, গোয়ালটুলি মোড় থেকে হেচারি মোড়ে যাওয়ার রাস্তায় চা পাতা কারখানা রয়েছে। ওই কারখানায় রোজ শ্রমিকরা যান। পাশাপাশি ওই রাস্তা দিয়েই রোগী ও প্রসূতিদের ফাঁসিদেওয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেতে হয়। গ্রামীণ রাস্তায় পথবাতি সেভাবে না থাকায় রাতে চলাচল করতে প্রত্যেকেরই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। নিজবাড়ি, হেচারি মোড়, তারবান্ধা, সাহানন্দাজোত, ঝমক-লালজোত, লাম্বুটারি, রুইধাসা সহ পাশ্ববর্তী এলাকায় রাস্তাগুলিও ভেঙে রয়েছে।