বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
তপনবাবু বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের সঙ্গে গ্রামের প্রতিটি মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। মন্ত্রী পুড়ে যাওয়া মন্দিরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি। তবে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে সম্প্রতি অভিযোগও করেছি। মন্ত্রী আসায় আমরা তাঁকে এনিয়ে বিস্তারিত জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সময় দিলেন না। মন্দির ঘুরে দেখে দ্রুত চলে যান।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, মন্দির পুনর্গঠনের কাজ আমি দেখে এসেছি। ছ’মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছি। স্থানীয়দের ভাবাবেগকে সম্মান দিয়েই মন্দিরে কাজ চলছে। হেরিটেজ লুক রক্ষা করেই বেদি তৈরি করা হচ্ছে। নকশায় সামান্য সমস্যা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটা সংশোধন করা হয়েছে। ভালোভাবেই কাজ চলছে।
জলপাইগুড়ির শিকারপুর চা বাগানের দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের মন্দিরকে ঘিরে ইতিহাস জড়িয়ে আছে। বৈকুণ্ঠপুর রাজবংশের বংশধর দর্পদেব রায়কত ভবানী পাঠকের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তিনিই এই মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন। ইংরেজ স্থপতি রেমন্ড হেলাইচ পাইন মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। ১৮৭১ সালে রাজা যোগেন্দ্রদেব রায়কতের আমলে মন্দিরটি সংস্কার করা হয়। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানি উপন্যাসেও এই মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। সাহিত্য প্রেমীদের কাছে বরাবরই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এই মন্দিরটি। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় অনেক বিপ্লবীই এখানে আত্মগোপন করেছিলেন। ২০১৮ সালে এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে কাঠের মন্দিরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর আগে একবার আগুন লেগে কাঠের মূর্তিগুলি নষ্ট হয়ে যায়। পরে মাটির প্রতিমা তৈরি করে পুজো চলছিল। ২০১৭ সালের অগ্নিকাণ্ডে মন্দিরটি ভস্মীভূত হয়ে যায়। সেদিনের রাতের আগুনে দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের মাটির মূর্তিগুলি পুড়ে যায়। মন্দিরও পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে পুরোপুরি পুড়ে যায় আরও কয়েকটি কাঠের মূর্তিও। রাজ্য সরকার মন্দিরটি পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করে। সেঅনুযায়ী কাজ শুরু হলেও কাজের মান নিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে। ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মন্দিরটির কাজ শুরু হয়। দিল্লির সংস্থার কাছ থেকে মন্দিরের নকশা বানিয়ে আনা হয়েছে। স্থানীয়দের সেই নকশা নিয়ে আপত্তি থাকায় সেটি পরবর্তীতে পরিবর্তন করা হয়। অসমের রঙ্গিয়ার শিল্পীদের দিয়ে কাঠের প্রতিমা তৈরি করা হবে। মন্দিরের চারদিকে পাঁচিল দেওয়া হবে। কুয়োটিও সংস্কার করা হবে। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য সহ স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ চলছে। দুর্বল বেদি যেকোনও সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মন্দিরের সঙ্গে ভাবাবেগ জড়িয়ে থাকায় নির্মাণ সঠিকভাবে করার দাবি উঠেছে।