নয়াদিল্লি: ডাইভিং দুর্ঘটনার পর কাঁধের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছে। তারপর থেকে জীবনটাই থমকে গিয়েছে। বর্তমানে শয্যাশায়ী ২৯ বছরের নোল্যান্ড আরবাঘ। কিন্তু, অসাড় শরীরে ফিরল ‘সাড়’। স্রেফ ভাবনাচিন্তার মাধ্যমেই কম্পিউটারে দাবা খেললেন তিনি। সৌজন্যে এলন মাস্কের ব্রেন-চিপ স্টার্টআপ নিউরালিঙ্ক। নোল্যান্ডই প্রথম রোগী, যিনি চিন্তাশক্তি বা টেলিপ্যাথির মাধ্যমে অনলাইন দাবা এবং ভিডিও গেম খেলতে সক্ষম হলেন। লাইভস্ট্রিমে তাঁকে ল্যাপটপে দাবা খেলতে দেখা গিয়েছে।   নিউরালিঙ্ক ডিভাইসের মাধ্যমে নিজের চিন্তাভাবনা অনুযায়ী কম্পিউটারের মাউস ব্যবহার করতে পেরেছেন তিনি। আরবাঘ বলছেনন, ‘স্ক্রিনের চারপাশে কার্সারটি যে ঘোরাফেরা করতে দেখছেন, তা আমার জন্যই। দারুণ ব্যাপার, না?’ ব্রেন-চিপ ডিভাইস ব্যবহার করেই তিনি দাবা খেলতে সক্ষম হয়েছেন। 
এলন মাস্কের ব্রেন-চিপ স্টার্টআপ নিউরালিঙ্ক বৃহস্পতিবার দেখিয়েছে,  তাদের প্রথম রোগী নিউরালিঙ্ক ডিভাইস ব্যবহার করে শুধুমাত্র তার চিন্তাভাবনা দিয়ে অনলাইন দাবা এবং ভিডিও গেম খেলতে সক্ষম হয়েছে। ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে মস্তিষ্কে চিপ বসানো নোল্যানকে দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে নোল্যান্ডকে মস্তিষ্ক ও কম্পিউটারের যুগলবন্দির প্রক্রিয়াকে বর্ণনা করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলছিলেন, ‘আমার ডান হাত বাঁম দিকে ও ডান দিকে বা সামনে ও পিছনে সরাতে পারছি। চিন্তাশক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের কার্সার ইচ্ছেমতো নাড়াচাড়া করতে পারছি। এত সহজে সব কিছু করতে পারছি, তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না।’ নোল্যান্ড জানিয়েছেন, নিউরালিঙ্কের গবেষণার অংশ হতে পেরে তিনি নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। 
এলন মাস্কের ব্রেন-চিপ স্টার্টআপ নিউরালিঙ্কের উদ্ভব ২০১৬ সালে। ডিভাইসটি দেখতে কয়েনের মতো। এটিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাথার খুলিতে বসানো হয়েছে। এর সূক্ষ্ম তারগুলি মস্তিষ্কে গিয়ে মস্তিষ্ক-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) তৈরি করে। ডিস্কটিতে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ লিপিবদ্ধ হয়। এরপর ব্লুটুথ সংযোগরে মাধ্যমে নির্দিষ্ট ডিভাইসে (যেমন, স্মার্টফোন) পাঠায়। গত ফেব্রুয়ারিতে এলন মাস্ক জানান, ‘এই প্রথম কোনও মানুষের মস্তিষ্কে এই চিপ লাগানো হয়েছে। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। নিজস্ব চিন্তাভাবনার মাধ্যমে তিনি কম্পিউটারের মাউস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছেন।’