রূপাঞ্জনা দত্ত, ২৯ জানুয়ারি: ভারতকে অস্থির করে তুলতে মিথ্যে রটনা ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচার চালাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একাধিক সংগঠন। ভারতের উন্নয়নের অগ্রগতি থামানোর পাশাপাশি দেশজুড়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য। লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এই মন্তব্য করেন ব্রিটেনের ভারতীয় হাই কমিশনার রুচি ঘনশ্যাম।
সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন করতে সোমবার লন্ডনের গিল্ডহলে বার্ষিক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ভারতীয় হাই কমিশন। এই অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের একাধিক মন্ত্রী, আধিকারিকদের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন অনাবাসী ভারতীয়দের অনেকে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় ব্রিটেন ও ভারতকে ‘স্বাভাবিক সহযোগী’ উল্লেখ করেন হাই কমিশনার। রুচি ঘনশ্যাম জানান, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে একযোগে কাজ করছে দুই দেশ।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই দীর্ঘদিনের। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে চলেছি আমরা। যার জেরে অন্তত কয়েক হাজার নিরীহ ভারতীয়ের প্রাণহানি হয়েছে। প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের চেহারাও বদলে যাচ্ছে। দেশর শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য মিথ্যে রটনা ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। এসবের একটাই উদ্দেশ্য— দেশের উন্নয়নের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দেওয়া।’ রুচি ঘনশ্যাম আরও বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ ও সীমান্তে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বিশেষ জোর দিচ্ছে ভারত সরকার। সীমান্তপারের সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসবাদের কারণে জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখে প্রায় কয়েক দশক ধরে সেভাবে কোনও উন্নয়ন হয়নি। সেই এলাকাতেও আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।’ একইসঙ্গে ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন দু’জন ব্রিটিশ এমপির ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেন রুচি ঘনশ্যাম। প্রসঙ্গত, এবছর সাধারণতন্ত্র দিবসে লেবার পার্টির এমপি ব্যারি গার্ডিনের এবং কনজারভেটিভ পার্টির এমপি বব ব্ল্যাকম্যানকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে ভারত সরকার। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।’
গত সোমবার গিল্ডহলে সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান জেমস ক্লেভারলি জানান, গতমাসের সাধারণ নির্বাচনে ১৫ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে, কখনও একসঙ্গে এতজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাবিনেটে আসেননি। পাশাপাশি, ব্রিটেনে পড়তে আসা ভারতীয় পড়ুয়াদের সংখ্যা ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ অ্যাফেয়ার্সমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ।  লন্ডনের গিল্ডহলের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ব্রিটেনের ভারতীয় হাই কমিশনার রুচি ঘনশ্যাম।