বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রবিবার মার্কিন মুলুকের হিউস্টনে মেগা ইভেন্ট ‘হাউডি মোদি’তে নাম না করে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। বলেছিলেন, ‘জঙ্গিরা কোথায় থাকে, সারা বিশ্ব জানে। সারা বিশ্ব জানে কারা অশান্তি চায়, কারা জঙ্গিদের মদত দেয়। আমেরিকায় ৯/১১ বা মুম্বইতে ২৬/১১-র মূলচক্রীরা কোথায় থাকে তা কারও অজানা নয়।’ ৫০ হাজার অনাবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে মোদির সঙ্গে তখন মঞ্চে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মোদির বক্তব্যের আগেই সন্ত্রাসদমনে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সভা শেষ হতেই মোদিকে জড়িয়েও ধরেছিলেন। সেই আবেগঘন মুহূর্ত সারা বিশ্বের কাছে নীরব বার্তা দিয়েছিল, সন্ত্রাসদমনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবে ভারত এবং আমেরিকা। আর মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প সরাসরি ঘোষণা করলেন, পাক সন্ত্রাস খতম করতে মোদি একাই একশো।
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চরমে। পাকিস্তান বারবার বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে গিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করলেও ভারত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, বিষয়টি একেবারেই তাদের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত। ইসলামাবাদকে এটাও বলা হয়েছে, কাশ্মীরের বাস্তবটা মেনে নিয়ে ভারত-বিরোধী প্রচার বন্ধ করা হোক। এহেন পরিস্থিতিতে সোমবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের বৈঠকের ফাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখানে কাশ্মীর ইস্যু উঠেছিল। ইমরান খানকে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘বিষয়টি জটিল। কিন্তু, যে কোনও সময় আমি এই ইস্যুতে মধ্যস্থতা করতে রাজি।’ মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার ঠিক আগেও ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি ভারত ও পাকিস্তানের আলোচনায় আমি সহায়তা করতে চাই। কিন্তু দুই দেশকেই ওই সহায়তা চাইতে হবে। এই প্রশ্নে দু’দেশের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। আর এই ভিন্নমতের বিষয়টি আমার অজানা নয়।’ কিন্তু, ভারত বারবারই বলে এসেছে, কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ তারা মানবে না। মোদির সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকের পর ট্রাম্প সোমবারের অবস্থান থেকে সরে আসেন। বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী খান একে অপরকে ভালোমতো চিনলেই বিষয়টি সহজ হয়ে যাবে। কাশ্মীর নিয়ে ওঁরা নিজেদের মধ্যে যদি আলোচনা করেন, ভালো কিছু বেরিয়ে আসতেই পারে। এতে যদি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়, তার থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না।’
কিন্তু, কাশ্মীর ইস্যুর পরিপ্রেক্ষিতে পাক সন্ত্রাসদমনে আমেরিকা যে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করছে, এদিনও তা বুঝিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের শরিক হয়ে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘উগ্র ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে নিরীহ ভারত-আমেরিকানদের রক্ষা করতে আমরা গর্বের সঙ্গে পাশাপাশি থাকব।’ আর মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের বৈঠকের ফাঁকে মোদিকে ইঙ্গিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বার্তা, পাক সন্ত্রাস খতম করতে মোদিই যথেষ্ট। ট্রাম্পের হাতে হাত রেখে নরেন্দ্র মোদির মুখে তখন গর্বের হাসি। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কি দেখছেন?