ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
কাদুর জংশন থেকে ট্রেন সবেমাত্র ছেড়েছে। তার মধ্যেই সামনের সিটে বসা দুই সহযাত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু। দু’জনকে ভালো করে দেখে পাশে বসা ভদ্রমহিলা বললেন, ‘বড় ঠকে গেলাম, বুঝলেন!’ একটু অবাক চোখে তাকালাম। সাদামাঠা দেহারা চেহারা। সাজপোশাকও সাধারণ। দুই সহযাত্রীর ঝগড়ায় বাকিদের ঠোঁটে চাপা হাসি, কিন্তু মহিলার মুখ গম্ভীর। ওঁর দিকে তাকাতেই বললেন, ‘এঁরা ব্যস্ত দল আর রাজনীতি নিয়ে। আর আমরা, যাঁরা এতদিন ধরে চোখ বুঝে জেডিএসকে ভোট দিয়েছি, এবারও প্রোজ্জ্বলকে ভোট দিয়েছি, তাঁদের কথা ভাবুন তো!’ আপনি হাসান কেন্দ্রের ভোটার? মাথা নাড়লেন ভদ্রমহিলা। জানা গেল, তাঁর নাম মঞ্জু। বাড়ি হোলেনারাসিপুর তালুকের এডেগৌরানাহাল্লিতে। স্বামীর সঙ্গে খাবারের হোটেল চালান। ভোট মিটতে ছোট মেয়েকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে এসেছিলেন কানের ভালো ডাক্তার দেখাতে। এখন যাচ্ছেন বাপের বাড়ি, তালগুপ্পায়। কথায় কথায় বললেন, ‘জানেন, আমাদের গ্রামে বহু মহিলা মোবাইলে ওই সব ভিডিও দেখেছে। সবাই বলছে, যদি ভোটের আগে জানতাম, ভালোমতো শিক্ষা দিতাম।’ মাথা নেড়ে স্ত্রীকে সমর্থন করলেন মল্লিনাথ। ঘুমন্ত মেয়ের চুলে হাত বোলাতে বোলাতেই ফুঁসে উঠলেন—‘আমরা সবাই প্রথম থেকেই জেডিএসের ভোটার। কিন্তু এবার যা হল, তাতে লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। লোকের কাছে দলের কথা বলার মুখ নেই আমাদের। গ্রামের সবাই ঠিক করেছে, যদি প্রোজ্জ্বল জেতে, তাহলে সকলে মিলে ওঁকে এমপি পদ ছাড়তে বাধ্য করব। দরকারে দেবেগৌড়াজির কাছেও যাব। কিন্তু প্রোজ্জ্বলকে মানতে পারব না।’
উল্টোদিকে বসা ভদ্রলোক ঝগড়া শেষ করে স্বামী স্ত্রীর কথা শুনছিলেন। এবার বললেন, ‘ভিডিও ভোটের আগেই বেরিয়েছিল। কিন্তু হয়তো গ্রামের দিকে সেভাবে পৌঁছয়নি। তাই কিছু মানুষ নিশ্চয়ই ওকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু যাঁরা জানতে পেরেছে, তাঁরা সবাই বিজেপি-জেডিএসকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আর সত্যি বলতে কী, নিচুতলায় ওদের জোট দানা বাঁধেনি। আর এবার যা অবস্থা, তাতে জোটটা থাকলে হয়!’
‘৪০০ পার’ ও ‘ মিশন সাউথ’ সফল করতে বিজেপির অন্যতম প্রধান ভরসা কর্ণাটক। আগামী ৭ মে ভোটগ্রহণ হবে শিমোগা, হাভেরি, বেলগাঁও, বাগালকোট, বিজাপুর, বিদারের মতো ১৪টি আসনে। এর মধ্যে প্রথম দু’টি কেন্দ্র পদ্ম শিবিরের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। গত লোকসভা নির্বাচনে ২৮টি আসনের মধ্যে ২৫টিই এসেছিল তাদের ঝুলিতে। এবার প্রোজ্জ্বল কাণ্ড যে গলার কাঁটা হতে যাচ্ছে, তা বিলক্ষণ বুঝেছে গেরুয়া শিবির। বুঝেছে জেডিএসও। প্রোজ্জ্বলের সঙ্গে তারা দূরত্ব বাড়িয়েছে। তাতে লাভ কিছু দেখছেন না মল্লিনাথ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললেন, ‘দেবেগৌড়া, কুমারস্বামী, রেভান্না হাসানের জন্য সত্যিই অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু এই ঘটনার পর আর সেসবের কোনও দাম রইল না!’