নয়াদিল্লি: ফের আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা। গত ১১ এপ্রিল আয়ারল্যান্ডের সংবাদপত্র আইরিশ টাইমসে ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচন নিয়ে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। ‘মোদি তাঁর মুঠো শক্ত করছেন’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, জওহরলাল নেহরুর সময়কার ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ভুলে মোদি হিন্দু জাতীয়তাবাদকে আঁকড়ে ধরছেন। এর ফলে ভারতে মুসলিম-বিরোধী মনোভাব ও হিংসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকী মোদির মনোভাবের সঙ্গে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এরদোগানের তুলনাও করা হয়েছে। আর এই সম্পাদকীয় প্রকাশ হওয়ার পর হঠাত্ করেই সমালোচনায় মাঠে নেমেছেন আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অখিলেশ শর্মা। রীতিমতো এক্স হ্যান্ডলে একটি চিঠি পোস্ট করে এই সম্পাদকীয়র সমালোচনা করেছেন তিনি। পাশাপাশি নাম না করে সম্পাদকীয় প্রকাশের পিছনে কংগ্রেসের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্রদূত। তাঁর দাবি, এই সম্পাদকীয় ‘অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট’। কার্যত বিজেপির সুরে অখিলেশের দাবি, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপি সরকারের লড়াই প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ।’ তাঁর দাবি, ৫৫ বছরে ভারতে দুর্নীতি শাখা প্রশাখা ছড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৩০ বছর একটি দলই এর জন্য দায়ী ছিল। রাষ্টদূতের দাবি, বিজেপি সরকার এজেন্সিগুলিকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় দুর্নীতি বিরোধী অভিযান সফল হয়েছে।
আর রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য প্রকাশের পরেই পাল্টা সরব হয়েছে কংগ্রেস। বিরোধীদের আক্রমণ করে এই ধরনের মন্তব্য অপেশাদার ও অসম্মানজনক বলে অভিযোগ করেছে তারা। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশের বক্তব্য, প্রকাশ্যে বিরোধীদের আক্রমণ করে বিজেপির অনুগত সদস্যের মতো আচরণ করছেন রাষ্ট্রদূত। রমেশের মতে, ‘ভারত সরকারের হয়ে রাষ্ট্রদূত কথা বলবেন, এটা প্রত্যাশিত। কিন্তু বিরোধীদের এভাবে আক্রমণ করা যায় না।’ রাষ্ট্রদূতের এহেন আচরণের পিছনেও প্রধানমন্ত্রীর মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
ওই সম্পাদকীয়তে আরও দাবি করা হয়েছিল, ভারতের গণতন্ত্র ‘ব্যাপকভাবে কলঙ্কিত’ হয়েছে। একইসঙ্গে ভারতে বাকস্বাধীনতা ও বিরোধী দলগুলিকে দাবিয়ে রাখার জন্যও মোদিকে দায়ী করেছে ওই সংবাদপত্র। এই প্রসঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার ও কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ৯৫ শতাংশ রাজনৈতিক মামলা বিরোধীদের সম্পর্কে করা হয়েছে।