সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
অগত্যা গন্তব্য শহরের প্রাণকেন্দ্র গান্ধীপুরম। অবাক যে হইনি, তা নয়। যদিও এখানকার সাংবাদিকরা পই পই করে সাবধান করেছিলেন, রাজ্য সভাপতি তথা কোয়েম্বাটোরের বিজেপি প্রার্থী এরকমই। প্রাক্তন আইপিএস, তাই মেজাজটাও পুলিসি। মিল রয়েছে বাংলার দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও। কারণ অবশ্যই মাঠে-ময়দানে উল্টোপাল্টা বক্তব্য রেখে খবরে থাকার চেষ্টা। কথাটা মিথ্যা নয়, স্বীকার করলেন সিপিএমের কোয়েম্বাটোর জেলা সম্পাদক সি পদ্মনাভন। জানালেন, প্রতিদিন দু’বেলা নিয়ম করে সাংবাদিক বৈঠক করেন আন্নামালাই। আর সেটাই সংবাদমাধ্যম ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখায়। এফএম থেকে ফেসবুক, ইউটিউব—সর্বত্রই টাকা দিয়ে প্রচার চলছে। নতুন প্রজন্মের ভোটারদের হয়তো এভাবে প্রভাবিত করা যাবে। কিন্তু তার বাইরে কেউ ওদের ভোট দেবে না। বিজেপিকে তামিলনাডুতে কেউ বিশ্বাস করে না।
বিজেপি নেতাদের দাবি অবশ্য উল্টো। এই ঔদ্ধত্যই নাকি তাঁদের সংগঠন মজবুত করছে। না হলে মাত্র ৩৯ বছর বয়সি কোনও নেতা গোটা রাজ্যে এভাবে জনপ্রিয় হতে পারেন না। সত্যিই, চেন্নাইতে মোদির রোড শো শেষে তাঁর সঙ্গে সেলফি নেওয়ার ভিড় দেখেছি। কিন্তু ভোটের ময়দানে এই ঔদ্ধত্য কী ভালো? জবাবটা দিলেন ভিওসি পার্কের জুসের দোকানে আসা আদিত্যন, ‘বিজেপির জন্য হয়তো ভালো। কিন্তু উনি পেরিয়ারের মূর্তি সরানো থেকে বড় বড় নেতাদের যেভাবে অপমান করছেন, তা আমরা ভালোভাবে নিচ্ছি না।’
তামিলনাডুর রাজনীতি বা জাতপাতের সমীকরণ এক্কেবারে আলাদা। এখানে নিম্নবর্ণের চাপে কোণঠাসা উচ্চবর্ণরা। তাই বিজেপির মতো হিন্দুত্ববাদী দলও এখানে কোনও ব্রাহ্মণ মুখকে প্রার্থী করেনি। বরং মোদি ভরসা রেখেছেন ওবিসি গৌন্দার সম্প্রদায়ের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা কর্ণাটক ক্যাডারের প্রাক্তন আইপিএসের উপর। সরাসরি মোদির সঙ্গে যোগাযোগ তাঁর প্লাসপয়েন্ট। সেটাই কী সব? অবশ্যই নয়। কারণ, এত জনপ্রিয়তা থাকলে বিজেপি মাত্র ২০ আসনে প্রার্থী দেয় নাকি? সহজ প্রশ্ন নেহরু কলেজ থেকে সদ্য পাশ করা তরুণ মাথিয়ালাগানের।
পিএমকে সহ জাতভিত্তিক রাজনীতি করা কিছু ছোট দলের সঙ্গে জোট করে ভালো ফলের আশা দেখছেন আন্নামালাই। ২০১৪ সালে একা লড়ে একটি আসন জুটেছিল বিজেপির। তারপর আবার শূন্য। ডিএমকের জেলা সম্পাদক থিরু এন কার্তিকের দাবি, ‘সেন্থিল বালাজিকে গ্রেপ্তার করে ওরা ভেবেছিল জিতে যাবে। প্রায় ১ লাখ ভোটে হারবেন আন্নামালাই। ওঁর ঔদ্ধত্য আমরা ভাঙবই।’ এআইএডিএমকের প্রাক্তন এমপি বালাগঙ্গারও এক সুর, ‘বাবার বয়সি নেতাদের আঙুলে নাচাতে চায় আন্নামালাই। সেই কারণেই আমরা বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙেছি।’ মাত্র আট বছর পুলিসে কাজ করেই তিনি ‘সিংহম’ হয়ে উঠেছেন। তার জন্যই ‘ধরাকে সরা’ জ্ঞান করছেন আন্নামালাই, সাফ জানাচ্ছেন অমৃতা বিশ্ব বিদ্যাপীঠমের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিভাগের অধ্যাপক ডঃ এস কনঘরাজও। তবু তিনি যদি জিতে যান? চেন্নাই সেন্ট্রালের ডিএমকে প্রার্থী দয়ানিধি মারানের জবাব, ‘কে? ওই জোকার? ওই অভাগা খোঁড়া হাঁস আর ওর জেমিনি সার্কাসকে আপনারা একটু বেশিই তোল্লাই দিচ্ছেন!’