কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
জানা যাচ্ছে, আগামীকাল দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে মোদি-ট্রাম্প বৈঠকে আরও ২০০ কোটি ডলার মূল্যের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ভারতকে প্রদানের কথা বলবে আমেরিকা। বস্তুত কৌশলগত অংশীদারিত্বই (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ) এই সফরের অন্যতম প্রধান প্রতিপাদ্য হয়ে উঠতে চলেছে। ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি, বাণিজ্যিক সুযোগপ্রদান এবং হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটি-পাঁচটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হবে ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে। ভারত এই প্রতিটি চুক্তিতেই রাজি বটে, কিন্তু অনেক বেশি প্রত্যাশা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ প্যাকেজ পেতে। তাই আগামীকালের বৈঠকে ভারত সওয়াল করবে অন্তত যাতে একটা লিমিটেড ট্রেড প্যাকেজ পাওয়া যায়। বিগত পাঁচ বছরে ট্রাম্প প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’নীতি আমেরিকার অর্থনীতিতে প্রয়োগ করায় পরোক্ষে ভারতের উপর প্রচুর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ভারত থেকে আমেরিকায় ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর ট্রাম্প চড়া শুল্ক আরোপ করেছেন। ভারতীয় প্রফেশনালদের জন্য এইচওয়ানবি ভিসা নিয়ে নরম হয়নি মার্কিন সরকার। শ্রম সংক্রান্ত পণ্য যেসব সুযোগ সুবিধা রপ্তানি বাণিজ্যে পেয়ে থাকে সেই তালিকা (জিএসপি) থেকে ভারতকে বাদ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এমনকী ভারত আর উন্নয়নশীল দেশ নয়, এই তকমা ঘোষণা করে অনেক অতিরিক্ত সুবিধার প্যাকেজ বন্ধ করা হয়েছে। পাল্টা ভারতও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় সম্প্রতি ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছেন, ভারত আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেনি কিছু ক্ষেত্রে। তাই আগামীকালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৈঠকে এই দূরত্ব দূর করে মোদি ও ট্রাম্প কতটা পরস্পরকে বাণিজ্যিক ও আর্থিক সুবিধা প্রদান করেন সেটাই কৌতুহলের জায়গা।
এবং চীন! ভারত ও আমেরিকা দু’তরফেরই কমন প্রতিপক্ষ। চীনের মোকাবিলায় সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রকল্প আগামীকাল ভারত-মার্কিন আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। সেটির নাম ব্লু ডট নেটওয়ার্ক। মূলত পরিকাঠামো উন্নয়নের এই প্রকল্প কি আদতে চীনের বেল্ট অ্যাণ্ড রোড ইনিশিয়েটিভের পালটা? এখনও সেটা রহস্যময়। ট্রাম্পের সঙ্গেই এসেছেন মার্কিন বিদ্যুৎ শক্তি সচিব। কারণ কি? ভারতে ৬টি পরমাণু চুল্লি নির্মাণের সম্ভাবনা আছে। আর একবার এই পথ প্রশস্ত হলে নিউক্লিয়ার সাপ্লয়ার গ্রুপের সদস্য হওয়ার পথে ভারতের দাবি আরও জোরদার হবে। একটানা ৩৫ ঘন্টার সফরে ভারত থেকে নির্বাচনের বছরে বড়সড় উপহার নিয়ে না গেলে স্বদেশে সমালোচিত হবেন। সেই কারণে প্রাণপণে ট্রাম্প চাইছেন যতটা সম্ভব এশিয়া তথা বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশটি থেকে সুসংবাদ নিয়ে যেতে। পক্ষান্তরে মোদিকও জবাবদিহি করতে হবে দেশে। তাঁর সরকারের আমলে অর্থনীতির অবস্থা তলানিতে। কর্মসংস্থান নেই। উন্নয়নের প্রতিটি সূচক কমছে। এরকম অবস্থায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে দু’দিন ধরে শুধুই ভারতীয় নাচগান দেখিয়ে কিংবা উৎসব উৎসব পরিবেশের লাইভ টেলিকাস্টে সীমাবন্ধ রেখে দিলে ভারতের পক্ষে তা কতটা লাভজনক হবে সেই জবাব তাঁকেই দিতে হবে। সেই জবারের জন্য প্রয়োজন অন্তত একটি বিশেষ ট্রেড প্যাকেজ। যা ভারতের রপ্তানি বাণিজ্যকে চাঙ্গা করবে। এসবের আড়ালে ভারত আগামীকাল উত্থাপন করবে একটি বিশেষ ইস্যু। আফগানিস্তান নীতি। তালিবানের সঙ্গে কী চুক্তি হল আমেরিকার? তার অভিঘাত কী হবে আগামীদিনে? এটাই সবথেকে বড় উদ্বেগ আপাতত ভারতের ভূ-রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণে। সেই ধোঁয়াশা কি কাটবে আগামীকাল দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও রবার্ট ও ব্রায়ানের হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটি বৈঠকে?