কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে। তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় বাজারে কালো টাকার রমরমা আটকানো। ব্ল্যাক মানি কতটা আটকানো গেল, তা তর্ক সাপেক্ষ। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর যে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ল, তার সুলুকসন্ধানে নেমেছিল আয়কর দপ্তর। ওই টাকা থেকে আয়করের হিষেব কষা শুরু করে ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট। গত ডিসেম্বর মাসে সেই কাজ শেষ হয়। দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই নোট বাতিল পরবর্তী সময়ে যে টাকা জমা পড়েছে, তার উপর আয়কর বকেয়া বা ‘ট্যাক্স ডিমান্ড’ দাঁড়াচ্ছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ হিসেব বহির্ভূত আয় থাকার কারণে ওই টাকা মেটাতে হবে করদাতাদের। বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে মেটাতে হবে ওই বিপুল পরিমাণ টাকার আয়কর।
কিন্তু চাইলেই কেউ আয়কর দিয়ে দেবে, বিষয়টি এত সহজ নয়, বলছেন দপ্তরের কর্তারা। তার জন্য হানাদারি চালাতে হবে তাঁদেরই। সেই নির্দেশই এসেছে দিল্লি থেকে। অফিসাররা বলছেন, শুধুমাত্র অফিস টাইমে কোনও সংস্থার বা ব্যক্তির অফিসগুলিতে আচমকা হানা দিয়ে বেআইনি সম্পত্তির হদিশ করার নাম ‘সার্ভে’। আবার যে কোনও সময় কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির অফিস ও বাড়িতে একযোগে হানা দেওয়ার নাম ‘সার্চ’। আয়কর দপ্তরের ইনভেস্টিগেশন বিভাগ সার্চ এবং সার্ভের কাজ করে। সেই রুটিন তল্লাশির কাজ যেমন চলার কথা, চলছে। তার পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের অফিসারদেরও বলা হয়েছে ‘রিকভারি সার্ভে’তে অংশ নিতে হবে। কী হবে সেই হানাদারিতে? দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কোনও সংস্থার নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে, হানাদারি চালানো হবে। তাঁদের থেকে আয়কর বাবদ টাকা, পেনাল্টি ও সুদ আদায় করা হবে। যদি কেউ তা দেন, তাহলে ভালো। তা না দিলে, যেভাবে আইন অনুযায়ী এগনো দরকার, তা করা হবে। সপ্তাহে অন্তত তিনটি কেসে তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছে অফিসারদের।
চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে আর প্রায় এক মাস দেরি। এদিকে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যাওয়া তো দূরের কথা, গত বছরের আদায়ের চেয়েও ঢের পিছিয়ে গোটা দেশ। যেখানে এবার আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ ৩৮ হাজার কোটি টাকা, সেখানে ন’মাস পেরিয়ে গিয়ে আদায় হয় মাত্র ৭ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা। এদিকে কর্পোরেট সংস্থাকে যে করছাড় দেওয়া হয়, তাতে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা কম আদায় হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। দপ্তরের মুখরক্ষা করতে আয়কর হানার সংখ্যা বাড়ানো হবে, এমন আশঙ্কা ছিলই। এবার সেটাই সত্যি হল, বলছেন কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, এত বড় সংখ্যক অফিসারদের মাঠে নামিয়ে এত বড় আকারের হানাদারি এর আগে হয়নি।