মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযো ... বিশদ
শীতের শেষে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে থার্মোকল-প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী ভেসে থাকতে দেখা যায়। সেই সমস্ত জঞ্জাল নিজেরাই পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বালি দ্বীপের এক বাসিন্দাদের কথায়, জেলা প্রশাসন (বনদপ্তরও) থেকে নদী পরিষ্কার রাখার বিষয়ে প্রচণ্ড কড়াকড়ি করা হয়েছে। কোনও নৌকা, লঞ্চ থেকে নদীতে জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে দেখলেই মোটা টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। ইদানীং অনেকে সঙ্গে ডাস্টবিন রাখছে। পাশাপাশি গাইডরাও বোঝাচ্ছেন পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে।
তা সত্ত্বেও নোংরা ফেলছেন কেউ কেউ। সেই সমস্ত জঞ্জাল নিজেরাই পরিষ্কার করছেন গ্রামবাসীরা। বালি দ্বীপের সড়কখালির বাসিন্দা শঙ্কর মণ্ডলের কথায়, তাঁরা দু’-তিনজন প্রতিদিন সকালে নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে এই জঞ্জাল সংগ্রহ করেন। দু’-তিনদিন এভাবে সংগ্রহ করা জঞ্জাল এক জায়গায় জড়ো করে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বন দপ্তরের এক কর্তা জানান, এই কাজের জন্য কোনও সময় বন দপ্তর, কোনও সময় কেন্দ্রীয় প্রকল্পে জেলা প্রশাসন, আবার কোনও সময় স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আর্থিক সাহায্য করে থাকে। আরেক বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডলের কথায়, পর্যটকদের ফেলে যাওয়া থার্মোকল-প্লাস্টিকের জন্য সুন্দরবনের পরিবেশগত ভারসাম্য ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশ আদালতও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিকবার। এই অবস্থায় আমাদেরই উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজন। তাই রুটি-রোজগারের ফাঁকেই প্রতিদিন নদী-পরিবেশ পরিষ্কার করেন তাঁরা।
আরেক গ্রামবাসী সুব্রত মণ্ডলের কথায়, আগে মাঝেমধ্যে জঙ্গলে গিয়ে বন্যপ্রাণী শিকার করতাম। এতে প্রাণের ঝুঁকি থাকে। তাই বন দপ্তরের পরামর্শে সেই কাজ ছেড়ে দিয়েছি। এখন একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় সারাদিন সুন্দরবন পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করি। রাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করি। সংসার চলে যাচ্ছে। মৎস্যজীবী সুশান্তবাবু বলেন, সুন্দরবনে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার ফলে মাছও অনেক কমেছে। তাই পরিবেশ, মাছ বাঁচাতে তাঁরা সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন। তবে সুন্দরবনের সর্বত্র এই সচেতনতা প্রয়োজন। বন দপ্তরও গ্রামবাসীদের মধ্যে এবিষয়ে প্রচার করছেন। স্থানীয় পরিবেশকর্মী অনিল মিস্ত্রি বলেন, সুন্দরবনের মানুষের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে বালি দ্বীপকে ‘মডেল' করে প্রচার চালাতে পারে প্রশাসন। আর একটু নজরদারি ঠিক রাখলেই সুন্দরবন অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে। আরও বেশি করে দেশি-বিদেশি পর্যটক টানা যাবে।