বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এদিন শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা যখন চলছে, ঠিক তখন কলকাতায় ব্রিগেডের সমাবেশে হাজির প্রধানমন্ত্রী। আর সেই সভার হাল জেনেই মমতা গলা চড়িয়ে বলেন, ‘মোদিবাবু,আপনি যখন ফাঁকা ব্রিগেডে বক্তৃতা দেন, আমি তখন রাস্তায়। রাস্তাই আমাকে রাস্তা শেখায়। রাস্তা দেখায়। লড়াই শেখায়। আমি চিরকাল স্ট্রিট ফাইটার।’ দলনেত্রীর সেই আগুনে কথার জবাবে ভিড় থেকে বারংবার আছড়ে পড়েছে করতালির ঝড়।
প্রায় আধঘণ্টার বক্তৃতায় গেরুয়া শিবিরকে বারবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেছেন, ‘বাইরে বিজেপির লোকজন বলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৩৬৫ ধারা করে দাও। আমি বললাম, করে একবার দেখাও না। তারপর দেখাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেটেরিয়ালটা কী! এসব পলিটিক্স আমরা জানি।’ তারপরই সরাসরি ‘খেলতে নামা’র আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। মমতা বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে আর কিচ্ছু না, বলো কবে বসবে? ডেট, টাইম তুমি ঠিক করো। জনগণ থাকবে সামনে। বাংলা নিয়ে ইলেকশন লড়বে নরেন্দ্র মোদি? তুমি ওয়ান টু ওয়ান মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে লড়ো। তুমি কত খেলতে পার আর আমি কত খেলতে পারি, দেখা যাবে।’ এরপরই গলা উঁচিয়ে তাঁর স্লোগান, ‘খেলা হবে।’ হাজার হাজার মহিলা-পুরুষ কণ্ঠে শোনা যায় প্রতিধ্বনি। তৃণমূলনেত্রী আবারও বলেন, ‘খেলা হবে। মোদি কো হটায়েঙ্গে, ভারত সে হটায়েঙ্গে। বিজেপি কো হটায়েঙ্গে।’
কিন্তু কীভাবে? সেই কৌশলও খোলসা করে দিয়েছেন মমতা। এবার ভোটের লড়াইয়ে তিনি রান্নার
গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদকেই মূল গুরুত্ব দিতে চান। নেত্রী বলেন, ‘আজকে আমি পার্টির মিটিং করে, শুধু ভোট নিয়ে কথা বলতে আসতে পারতাম। কিন্তু আমি মনে করি, আমার কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু এখন গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। আগুন জ্বলছে রান্নাঘরে। লাগামছাড়া পেট্রলের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে। মানুষ দুঃখে আছে। বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছি। আর ন’শো টাকা দিয়ে তা রান্নার গ্যাস কিনতে হচ্ছে মানুষকে। কেরোসিন দিচ্ছে না। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আজ মানুষের যে সমস্যা, তা আমার কাছে রাজনীতি, ভোটের থেকে অনেক বড়।’
এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবধানবাণীও শুনিয়েছেন নেত্রী। সঙ্গে তুলে ধরেছেন বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দেওয়ার মতো ইস্যুকেও। চ্যালেঞ্জের সুরে মমতা বলেন, ‘শুনে রাখবেন, রান্নাঘরে আগুন লাগালে মা-বোনেরা ছেড়ে কথা বলবে না। বিনা পয়সায় যদি আমরা খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা দিতে পারি, তাহলে বিনা পয়সায় মানুষকে রান্নার গ্যাস দিতে হবে তোমাকে। যতক্ষণ না দেবে, একটি ভোটও কেউ দেবে না।’ বলাই বাহুল্য এই কথার জবাবে চিৎকারে সমর্থন জানিয়েছে গোটা শিলিগুড়িবাসী।
ভাষণের একদম শেষলগ্নে সমবেত জনতাকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন মমতা। তাঁর বার্তা, এটা হচ্ছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এই নির্বাচনে যদি অস্তিত্ব রক্ষা করতে না পারেন, বাংলাটাকেও ভাগ করে দিয়ে চলে যাবে মোদি। আর তা রুখে দিতে পারেন একমাত্র আপনারাই। সাধারণ মানুষের উপর সেই আস্থা রাখছেন জননেত্রী।