শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ক্যাব নিয়ে জেলায় জেলায় হিংসার পিছনে একটি নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনের হাত দেখছেন গোয়েন্দারা। তার সঙ্গে জুড়েছে একাধিক উগ্রবাদী গোষ্ঠী ও দক্ষিণ ভারত ভিত্তিক একটি দল। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, পরিকল্পনামাফিক যাতে রাজ্যে অশান্তি পাকানো যায়, সেজন্য সীমান্ত এলাকায় একাধিকবার তারা বৈঠকও করেছে। সেসব বৈঠকে সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল প্রতিবেশী দেশের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাও। সেখান থেকেই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য রাজ্য প্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলা ও গোলমাল পাকানো। তবে পুরো বিষয়টির পিছনে বড় মাথা কেউ রয়েছে বলে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। সেই ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে, তা চিহ্নিত করাই এখন লক্ষ্য তাঁদের। গোয়েন্দারা বুঝতে পারছেন, নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য নিয়ে গোটা ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আন্দোলনের প্রকৃতি ও ঘটনাক্রম বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাঁরা দেখছেন, সমস্ত জায়গাতেই একই কায়দায় হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। এমনকী সময়ের হিসেব কষে দেখা গিয়েছে, প্রায় সব জায়গাতেই কমবেশি একইসঙ্গে তা শুরু হচ্ছে। সেই কারণেই অফিসারদের বক্তব্য, আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করছে বড় মাপের কেউ। সেখান থেকেই সমস্ত নির্দেশ আসছে। ওই ‘মাস্টারমাইন্ড’-এর সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হচ্ছে। ভুয়ো মেসেজ এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেক দিন আগে থেকেই এর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এমনকী পেট্রল, ডিজেল থেকে শুরু করে আগুন লাগানোর জন্য দাহ্য রাসায়নিক ও অন্যান্য সামগ্রী মজুত করা হয় আগে থেকেই। গোয়েন্দাকর্তাদের বক্তব্য, মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণগঞ্জে পাঁচটি ট্রেনে আগুন লাগানো থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। তাঁদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগে নিষিদ্ধ একটি ছাত্র সংগঠন এর পিছনে রয়েছে। তার সঙ্গে মিলেছে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে তলায় তলায় সম্পর্ক রেখে যাওয়া কয়েকটি সংগঠন। বিভিন্ন জেলায় তাদের ভালো সদস্য রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, বীরভূম সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ওই নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ও সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলা সংগঠনটির ভালো জনভিত্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ক্যাবের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই তারা নিজেদের মধ্যে একাধিক বৈঠক করেছে। দক্ষিণ ভারত ভিত্তিক একটি দলও এই পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে বলে খবর।