কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
এনআরসি আতঙ্কে ইতিমধ্যেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তবে এরাজ্যে এনআরসি হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস সত্ত্বেও বিজেপি’র হুমকি অব্যাহত। সেই প্রেক্ষাপটে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলে বাংলায় এনআরসি হবেই বলে এদিন ফের ঘোষণা করলেন দিলীপবাবু। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতায় একই বিষয়ে দলীয় কর্মীদের ডাকা বৈঠকের প্রাক্কালে এদিন ফের তাঁর এই ঘোষণায় বিষয়টির রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও বাড়লো বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। তাঁর ব্যাখ্যা, যাঁরা ভারতের নাগরিক, তাঁদের ধর্ম যাই হোক না কেন, এনআরসি নিয়ে তাঁদের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। এনআরসির মূল লক্ষ্য বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার নামে মুসলমান সম্প্রদায়কে তালিকা থেকে বাদ দেওয়াই বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচি। কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন সাংসদ সর্দার আমজাদ আলি মনে করেন, বিজেপি নাগরিকত্বের নামে ধর্মীয় পরিচিতির ভিত্তিতে বিভাজন চাইছে। বাম কংগ্রেসের এই আক্রমণের জবাবে দিলীপবাবুর দাবি, স্বাধীনতার পর থেকেই মুসলমান সম্প্রদায়কে ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশাপাশি কমিউনিস্টরাও দায়ী। তাই তারা সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামায়নি। দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও মুসলমানরা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ওই ভূমিকা ধরে ফেলেছেন। সেই কারণেই উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতের মতো এরাজ্যেও মুসলমানদের মধ্যেও বিজেপি সম্পর্কে সদর্থক ধারণা তৈরি হচ্ছে। বিগত লোকসভা ভোটেই তা দেখা গিয়েছে বলে দাবি দিলীপবাবুর। সুজনবাবুর মতে, ওই দাবির কোনও ভিত্তি নেই। আসলে সংখ্যালঘুদের রক্ষার নামে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। অহিন্দুদের রাষ্ট্রহীন করে দিয়ে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল। এনআরসির বিরুদ্ধে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ এক হয়ে লড়বে। প্রতিরোধ করা হবে বিজেপির এই উদ্যোগ।
এদিন একটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও এনআরসির বিরুদ্ধে আদালতে জনস্বার্থ মামালা দায়ের করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। মানবিকতা মঞ্চের পক্ষে মানিক মণ্ডলের দাবি, অসমের মতো বাংলাতেও এনআরসি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তার কারণ ১৯৭১ সালের যে নথিগুলি মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজছে, বা না পেয়ে আতঙ্কিত হচ্ছে, তার প্রয়োজন এনআরসিতে খুবই নগন্য। সর্বশেষ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (২০০৩)-এ ১৯৪৮ সালের ১৯ জুলাইকে ভারতে আসার সর্বশেষ সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে। এনআরসি আতঙ্কে মৃত মানুষের পরিবারগুলিকে কেন্দ্রের তরফে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আরও একটি মামালা করেছে এই সংগঠন।