বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সোমবার দুপুর একটায় নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিসে বৈঠকের আগেই এদিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি জানতে চান মোদি। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের সেই সাক্ষাৎকার ছিল সন্দেশখালি কাণ্ড ঘটে যাওয়ার আগেই নির্ধারিত।
দুটি বৈঠকের পর রাজ্যপাল বলেন, ‘ভোট মিটে যাওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, তা অনভিপ্রেত। আমি সবাইকে শান্তি বজায় রাখার জন্য আহ্বানও করেছি। এবং প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিয়েছি। ওঁরা জানতে চেয়েছিলেন। আমিও পরিস্থিতি জানিয়েছি। এরপর ওঁরাই ঠিক করবেন কী করা উচিত।’ কিন্তু বিজেপি তো রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করছে। অশান্তির পিছনে তৃণমূলকে দায়ী করছে? এই প্রশ্নর উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমার কাছে বিজেপি তৃণমূল সব সমান। আমি রাজ্যপাল। তাই কোন রাজনৈতিক দল কী দাবি করছে, তা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যে রাজ্য বিজেপি কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে চলে যাবে। কারণ, রাজ্যে আগ্রাসী অধিকার পেতে রাজনৈতিক সংঘর্ষকে রাজ্য বিজেপি হাতিয়ার করতে চাইছে বলে অভিযোগ। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, রাজ্যে যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী। তাই আমরা কেন্দ্রের কাছে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করব। তবে আজ রাজ্যপাল পরোক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনও রাজ্যে বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা সহজ নয়। তাই তিনি স্পষ্ট বলেছেন, রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারও সঙ্গেই কথা হয়নি। উল্লেখ্য, লোকসভায় বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও রাজ্যসভায় সরকার এখনও সংখ্যালঘু। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে গেলে ছ’মাসের মধ্যে সংসদের উভয়কক্ষের সিলমোহর প্রয়োজন। রাজ্যসভায় যা আদায় করা কেন্দ্রের পক্ষে যা সহজ নয়। তাই সংবিধানের ৩৫৬ ধারা বা রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু করা সহজ নয়। বিশেষত, কর্ণাটকের বোম্বাই মামলার পর কোনও কেন্দ্রীয় সরকারই ওই ঝুঁকি নেয়নি।
বিজেপির একাংশ চাইছে, অন্তত যেন ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, বহিরাগতের আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদির জেরে আইন শৃঙ্খলা যদি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখনই কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু এখনও সে পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তাই ৩৫৫ ধারাও প্রয়োগ করা কেন্দ্রের পক্ষে সহজ হবে না। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজ্যের অবিজেপি সরকারও ক্ষুব্ধ হবে। তাই আপাতত সাধারণ ‘অ্যাডভাইসারি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে কেন্দ্র। খুব বেশি হলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে চাপে রাখতে কেন্দ্রীয় টিম পাঠাতে পারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।