বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এদিন কলকাতার কন্টেইনমেন্ট জোনে স্বাস্থ্যবিধি মানার চল তেমনভাবে চোখে পড়ল না। কেমন যেন উদাসীন ভাব! অনেকে মাস্ক পরে রাস্তায় বেরলেও খোলা মুখের লোকও দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কেন মাস্ক পরেননি, জিজ্ঞাসা করতেই কারও মুখে অনাবিল হাসি, কেউ আবার স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুললেন। নিউ আলিপুরের বিভিন্ন ব্লক, ভবানীপুরের চক্রবেরিয়া রোড, চন্দ্রমাধব রোড, শরৎ বোস রোড, বেলেঘাটা চাউলপট্টি, বেলেঘাটা মেইন রোড, মানিকতলা মেইন রোড, সুরেন সরকার রোড প্রভৃতি কন্টেইনমেন্ট জোনের বেশিরভাগ এলাকাতেই সামগ্রিক ছবিটা এক। শিকেয় উঠেছে সামাজিক দূরত্বের বিধি।
চক্রবেড়িয়া রোডে বোরো অফিসের সামনে চায়ের দোকানে দল বেঁধে চলেছে আড্ডা। মাস্ক ছাড়াই ক্রেতাদের সামলাতে দেখা গিয়েছে দোকানিকে। প্রশ্ন করলে জবাব মিলেছে, ‘কাল থেকে লকডাউন, আজ কড়াকড়ি কীসের।’ একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে অভিজাত এলাকা নিউ আলিপুরেও। বেলেঘাটার চাউলপট্টি রোড এলাকায় বেপরোয়া মানুষের অভাব নেই। খালপাড় সংলগ্ন এলাকায় হাতেগোনা কিছু মানুষকে দেখা গিয়েছে মাস্ক পরতে। কেন পরেননি? জিজ্ঞাসা করতেই মিলেছে রকমারি উত্তর। ‘গরমে মাস্ক ভিজে গিয়েছে’, ‘দম নিতে সমস্যা হচ্ছে’, ‘এখনই বাড়ির ঢুকে যাব’, আরও কত কী।
একই অবস্থা শহরতলি বারাকপুরের। গোটা মহকুমাতেই এনিয়ে হেলদোল নেই মানুষের। সামাজিক দূরত্ববিধি ক’জন মানছেন, হাতে গুনে বলা যায়। মাস্ক পরার অভ্যাসকেও দূরে সরিয়ে রেখেছেন অনেকে। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া তো দূরের কথা। খাবারের দোকানে ভিড়, গল্পগুজব করা, মোবাইলে সিনেমা চালিয়ে গায়ে গা লাগিয়ে উপভোগ করা—কিছুই বাদ যাচ্ছে না। জিজ্ঞাসা করতে এস এন ব্যানার্জি রোডে এক মিষ্টির দোকানের কর্মচারী বললেন, এই জনবহুল এলাকায় এত সামাজিক দূরত্ববিধি মানলে চলবে! তাহলে তো কাজ ফেলে সারাদিনই ঘরে বসে থাকতে হবে।
স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একাধিক ফাস্ট ফুড-বিরিয়ানির দোকান। এক টোটোচালক বললেন, ছুটির দিনে এই দোকানগুলিতে তেমন ভিড় হয় না। বাকি দিনগুলিতে এসে দেখবেন, কী অবস্থা হয়। কেউ কিছু মানে না। কে কাকে টপকে আগে খাবার কিনবে, তা নিয়ে রীতিমতো ঠেলাঠেলি হয়। ‘যা খুশি, তাই করব’ মানসিকতা নিয়ে চলছে লোকজন।
বারাকপুর স্টেশন থেকে বুড়ির বাজার মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, ১৫ নম্বর রেলগেট উড়ালপুলের পাশে একদল যুবক খেলছে। কারও মুখেই মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব তো নৈব নৈব চ! তাঁদেরই একজনকে জিজ্ঞাসা করতে বললেন, মাস্ক পরে কি ক্রিকেট খেলা যায়? এখানে তো আমরা সবাই বন্ধু। বি টি রোডের পাশের অলিগলিতে ঢুকে তো বোঝাই গেল না, করোনা বলে কোনও বস্তু আছে। প্রাক-করোনা পরিস্থিতিই যেন বিরাজ করছে এখানে। জায়গায় জায়গায় জটলা বেঁধে গল্প করা, বাইক নিয়ে দাপাদাপি, কলতলায় দাঁড়িয়ে ঝগড়া করা—সব কিছুই চলছে আগের মতো।
বি টি রোডে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা এক ট্রাফিক পুলিসকর্মী বললেন, কারও মুখে মাস্ক নেই। সেটা আমরাও জানি। কিন্তু কী করবেন বলুন! এখানে বলতে গেলেই রাজনীতির ভয় দেখানো হয়। অবাধ্য মানুষের জন্যই এখানে বাড়-বৃদ্ধি হচ্ছে করোনার।