বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ফলত, সীমান্ত উত্তেজনার আঁচে পুড়ছে পুড়ুক গলওয়ান। নেট দুনিয়া কাঁপছে কাঁপুক। চীনা পণ্য বয়কটের স্লোগান উঠছে উঠুক। ড্রাগনের ‘ডাম্পিং’ নীতিকে রুখতে শুল্ক বাড়লেও না হয় বাড়ুক। সেদিকে হুঁশ নেই কলকাতার সবচেয়ে পুরনো চাইনিজ খাবারের ঠেক টেরিটি বাজারের। চীন-ভারতের যুদ্ধ জিগিরের তাপউত্তাপ নেই কোথাও। মোটামুটি পকেটের ক্ষমতা বুঝে এগরোল আর চিকেন মাঞ্চুরিয়ান পেলেই হল! খাবারের আবার ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা’ রয়েছে নাকি? এখানে চাইনিজ রেস্তরাঁ আর খাদ্যরসিক শহরবাসীর মধ্যে ‘হিন্দি-চিনি ভাই ভাই’ ভাব!
পড়ন্ত বিকেল। বৃষ্টিভেজা টেরিটি মার্কেট। একটি চাইনিজ রেস্তরাঁয় সবে খাওয়া-দাওয়া সেরেছেন দিয়া সেন। কথায় কথায় তিনি বলছিলেন, ‘বাঙালি খাবারের রুচি বদলাতে চাইনিজ খাবারের কোনও জুড়ি নেই। সময় পেলেই চলে আসি এখানে। রেসিপির গন্ধেই মনপ্রাণ জুড়ে যায়। স্বাদও অতুলনীয়। চীন-ভারতের দ্বন্দ্বে সেই স্বাদ আমি অন্তত ছাড়তে পারব না! যে যাই ভাবে ভাবুক।’ দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ ছিল টেরিটি বাজার। তাতে কদর খানিক কমেছে। ট্যাঁকে জোরও নেই কিছু খাদ্য প্রেমিকের। তাহলেও আনলক ওয়ানে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে রেস্তরাঁগুলির ব্যস্ততা। দিয়াদের মতো বহু খাদ্যরসিকই ভিড় জমাচ্ছেন টেরিটি বাজারে। তাতে হাসিও ফুটছে চাইনিজ রেসিপি নির্মাতাদের।
বাজারের ভিতর ছাতাওয়ালা গলি। একাধিক রেস্তরাঁর সহাবস্থান এখানে। নামজাদা এক চাইনিজ ইটিং-হাউসের কর্তা বলছিলেন, ‘আমরা মনেপ্রাণে এখন ভারতীয় নাগরিক। তিন-চার প্রজন্ম কলকাতার বাস করছি। ভারতের উপকরণ দিয়েই তৈরি করি খাবার। চীনা পণ্য বয়কট আন্দোলনের কোনও প্রভাব পড়েনি এখানে। চায়না টাউনের সঙ্গে সখ্য ছাড়েননি শহরবাসীও। আশা করছি খুব শীঘ্রই প্রতিকূল পরিস্থিত কেটে যাবে।’ কথার মধ্যে থাবা মেরে আর এক ব্যবসায়ী টনি বলছিলেন, ‘চীনা পণ্য বর্জনের ডাকে আমাদের উদ্বেগ নেই। কারণ খাঁটি চাইনিজ রেসিপি তৈরি ভারতীয় পণ্যেই। পদ্ধতি শুধু আমাদের। আর আমরাও তো এখন ভারতেরই নাগরিক। গলওয়ানের উত্তেজনা টেরিটি বাজারকে স্পর্শ করবে না।’