কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
কেন্দ্রীয় তথ্য জানার অধিকার আইনে পাঠানো প্রশ্নাবলীর উত্তরে এই বিস্ফোরক উত্তর জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শর্মিষ্ঠা শিকদার সরকার নামে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা এক মহিলা এ বছর ৩ জানুয়ারি পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জনস্বার্থে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে চান। এই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য পিজি হাসপাতালের তথ্য আধিকারিক বা পাবলিক ইনফর্মেশন অফিসার তা পাঠান পিজি’র ইমার্জেন্সির মেডিক্যাল অফিসার ইনচার্জ ডাঃ সন্দীপ বিশ্বাসের কাছে। সন্দীপবাবু সাফ সাফ উত্তর দেন, তাঁদের কাছে কত রোগী পিজিতে ভর্তি হতে পারলেন না বা ফেরত গেলেন, সেই হিসেবই নেই। কারণ, পিজিতে নেই কোনও রেফারেল রেজিস্টারই! রবিবার পিজি’র সুপার ডাঃ রঘুনাথ মিশ্র একথা স্বীকার করে বলেন, বেডের অভাব থাকায় সবাইকে ভর্তি করা সম্ভব নয়। রেফার করতেই হয়। হ্যাঁ, আমাদের একটি রেফারেল রেজিস্টার থাকা দরকার। সেটা রাখতে হবে।
সূত্রের খবর, রোজ গড়পড়তা ৮০০ জন আশঙ্কাজনক রোগী পিজির ইমার্জেন্সিতে দেখাতে আসেন। আউটডোরে ডাক্তার দেখান কমবেশি ১৫ হাজার। সেখানে আউটডোর হোক এবং ইমার্জেন্সি—দুই জায়গা থেকেই রোজ ভর্তি হন গড়ে মাত্র ২৭৫ জন! এর মধ্যে ইমার্জেন্সির মাধ্যমে? খুব বেশি হলে ১০০-১৫০ জন। বাদবাকিরা? দূরদূরান্ত থেকে আসা সেইসব মুমুর্ষু রোগীরা কারা, পিজি যখন তাঁদের ভর্তি করতে পারলেন না, তাঁদের ভবিতব্য কী হল, কিছুই জানে না পিজি।
কেন এই রেফারের খবর রাখে না পিজি, তার যুক্তিও তুলে ধরা হয়েছে আরটিআই-এর উত্তরে। বলা হয়েছে, ‘পিজি একটি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল। সাধারণ পরিস্থিতিতে এখান থেকে কোনও রোগী অন্য হাসপাতালে রেফার হন না। তাই এখানে কোনও রেফারেল রেজিস্টার নেই’। যুক্তিগতভাবে এই কথা বলা হলেও সরকারি হিসেব অনুযায়ী শুধু ইমার্জেন্সি আসা রোগীদের হিসেব ধরলেই, রোজ গড়পড়তা ৮০০ জনের মধ্যে মাত্র ১০০ জন ভর্তি হতে পারছেন। শতকরা হিসেবে ১২.৫ বা ১৩ শতাংশ। বাদবাকি ৮৭ শতাংশ রোগীই ভর্তি হতে পারছেন না, আউটডোর থেকে রোগী ভর্তি এবং রেফারের হিসেব করলে এই পরিসংখ্যান অস্বস্তি আরও বাড়াবে রাজ্যের এক নম্বর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের!
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, একাধিকবার পিজিসহ প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজকে রেফারেল রেজিস্টার রাখতে নির্দেশ দেন শীর্ষকর্তারা। তাতে রেফার হওয়া রোগীর নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি রেফার কেস অডিট করতেও বলেছিল স্বাস্থ্যভবন। অর্থাৎ কেন রেফার, তার যুক্তি দিতে হবে। এখানেই শেষ নয়, যদি বেডের অভাবে কোনও রোগীকে ভর্তি করতে না পারে কোনও মেডিক্যাল কলেজ, তাহলে অন্য মেডিক্যালের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেড সুনিশ্চিত করে, সেখানে তাঁকে পাঠানোর কড়া নির্দেশ রয়েছে দপ্তরের। কারণ একটাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দপ্তরে যেন রোগীকে ভর্তি করতে না পেরে রাজ্যের কাউকে চোখের জল ফেলতে না হয়। সেই নির্দেশ হাতেকলমে কতটা মানা হচ্ছে, আরটিআই-এর বিস্ফোরক উত্তরই তার প্রমাণ।