উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। হিসেব করে চললে তেমন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। ব্যবসায় উন্নতি ... বিশদ
পাঁচের দশকের প্রথম দিকে ইস্ট বেঙ্গল প্রশাসনে গুরুত্ব বাড়ে বসুশ্রী সিনেমার মালিক মন্টু বসুর। কিংবদন্তি আমেদ খান থাকতেন এই হলের উপরে বসু পরিবারের গেস্ট হাউসে। ভোর পাঁচটায় উঠে বসুশ্রীর সামনের ফুটপাতে জল ঢেলে ড্রিবলিং প্র্যাকটিস করতেন তিনি। বিকেলের দিকে ওই কফি হাউসে আড্ডা মারতেও দেখা যেত তাঁকে। ওই সময়ে বাড়ি কিংবা মেস থেকে ওখানে আসতেন ইস্ট বেঙ্গলের এক ঝাঁক ফুটবলার। ফুটবলারদের মধ্যে বন্ডিং বাড়ানোর জন্য যে আড্ডার প্রয়োজন ছিল অনস্বীকার্য। উল্লেখ্য, ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত মন্টু বসু ছিলেন ইস্ট বেঙ্গলের ফুটবল-সচিব। পরে হন সহ-সভাপতি। দরাজ মনের এই মানুষটি শ্রদ্ধা আদায় করেছেন মোহন বাগান ফুটবলারদেরও। তাই বসুশ্রী কফি হাউসের আড্ডায় মাঝেমধ্যে আলো ছড়াতেন চুনী গোস্বামীও।
ইস্ট বেঙ্গলের সোনালি আড্ডার কো-অর্ডিনেটর তথা ১৯৬৬ সালের অধিনায়ক চন্দন ব্যানার্জি বলছিলেন, ‘আশুতোষ কলেজে আমি ও চুনী একসঙ্গে পড়তাম। দু’জনেই পিওর সায়েন্সের ছাত্র। আমার রোল নম্বর ২৮৪। চুনীর ২৮৩। কলেজ জীবন থেকেই বসুশ্রী কফি হাউসে যাতায়াত ছিল। সেই দিনগুলি এখনও ভুলতে পারিনি। মনে আছে, আমেদ খানের ব্যক্তিত্ব ছিল অসাধারণ। আড্ডয় বেশিক্ষণ থাকতেন না। তবে শুভাশিস গুহ,কেম্পিয়া, রামবাহাদুর, থঙ্গরাজ, বলরাম, অসীম মৌলিক, পরিমল দে’রা ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকত। ওই সময়েই থঙ্গরাজ- কেম্পিয়া-রামবাহাদুরদের বাংলা শেখাতাম। কোনও কোনও সময়ে আড্ডা না মেরে ইভনিং শোয়ে সিনেমা দেখতাম। অভিনেতা অনিল চট্টোপাধ্যায় ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আসতেন নিয়মিত। আপনজন সিনেমা হিট হওয়ার পর হাজির হতে দেখেছি শমিত ভঞ্জকেও। মন্টু বসুদের কাছ থেকে কফি হাউস ভাড়া নিয়ে চালাতেন চিকু নামে এক পাঞ্জাবি ভদ্রলোক। কোনও সন্দেহ নেই, ১৯৫৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত বসুশ্রী কফি হাউসের সেই আড্ডা আমাদের হৃদয়ে লাল হরফেই লেখা থাকবে। ১৯৭১ নকশাল আন্দোলন শুরু হওয়ার পর যা ভেঙে যায়।’