উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। হিসেব করে চললে তেমন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। ব্যবসায় উন্নতি ... বিশদ
বিপ্লবী ত্রয়ী অর্থাৎ বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্তের নাম আজও মনে রেখেছে কল্লোলিনী তিলোত্তমা। ইতিহাসের পাতায় রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান পড়লে এখনও শিহরিত হয় বাঙালি। দুয়ের দশকে এই তিন বিপ্লবীকেই মেদিনীপুর থেকে এসপ্ল্যানেডে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইস্ট বেঙ্গলের সাইড ব্যাক দীনেশ গুহ। ইংরেজ পুলিসের কড়া নজর এড়িয়ে নিজের দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন তিনি। সেদিনই রাইটার্স অভিযানের রেইকি সেরে নিয়েছিলেন তাঁরা। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢুকে বিনয়, বাদল ও দীনেশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ার কারা বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল এমএস সিম্পসনের।
১৯২৮ সালে কংগ্রেসের জাতীয় অধিবেশন হয়েছিল কলকাতায়। যা সফল করতেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গঠন করেছিলেন বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স। বিপ্লবীদের দমননীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল যে সংস্থা। নেতাজির এই সংগঠনে ছিলেন অধুনা বাংলাদেশের অসংখ্য যুবক। স্বাধীনতা প্রেমে মাতোয়ারা এই দামালদের নিয়েই একাধিক পরিকল্পনা ছিল এলগিন রোডের বাসিন্দার। বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে যোগ দিয়েছিলেন ইস্ট বেঙ্গলের দুই ফুটবলার সূর্য চক্রবর্তী ও দীনেশ গুহ। এঁদের দু’জনের মধ্যে ফুটবলের প্রতি বেশি টান ছিল সূর্যরই। দুয়ের দশকের শেষদিকে লাল-হলুদের প্রথম একাদশে অনিয়মিত হয়ে পড়ায় দীনেশ মেতে ওঠেন বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে। উত্তর কলকাতার বিখ্যাত স্টার থিয়েটারে বিপ্লবীদের আড্ডা ছিল। এমএস সিম্পসন, ডগলাস, পেডির মতো ইংরেজ অফিসারদের মারার নীল নকশা তৈরি হয়েছিল এখানেই। পক্ষান্তরে, বিনয়-বাদল-দীনেশ ছিলেন অধুনা বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তরের সঙ্গে বিনয়ের যোগাযোগ ছিল। রাইটার্স বিল্ডিং অপারেশনের প্রস্তুতি তাঁরা মেদিনীপুরেই নিয়েছিলেন। েসখান থেকে এসপ্ল্যানেড অঞ্চলে তাঁদের পৌঁছে দিতে বড় ভূমিকা ছিল দীনেশ গুহর। তাঁর জীবনরক্ষার কারণেই গোটা ঘটনাটি সেভাবে প্রকাশ্যে আসনি। এছাড়া আরও দু’টি ক্ষেত্রে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের যোগসূত্র আছে। ১৯৩০ সালে ইস্ট বেঙ্গল দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলত। লিগের প্রথম আটটি ম্যাচ জিতে খেতাবের দোরগোড়ায় পৌঁছেছিল লাল-হলুদ। ওই বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে মহাত্মা গান্ধী ডাক দেন ডাণ্ডি অভিযানের। যার ঢেউ আছড়ে পড়ে বাংলাতেও। তাই প্রথম ডিভিশনে ওঠার সোনার সুযোগ থাকলেও ইস্ট বেঙ্গলই প্রথম ক্লাব যারা লিগ বন্ধের দাবি তোলে। ফুটবলাররাও জড়িয়ে পড়েছিলেন সেই আন্দোলনে। পাশাপাশি বিদেশি দ্রব্য বর্জনে সেই যুগে বড় ভূমিকা নিয়েছিল বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিল। শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবি যে সংস্থা বিনামূল্যে বিতরণ করত। ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চৌধুরি ছিলেন এই মিলের মালিক। অর্থাৎ, স্বাধীনতা আন্দোলনে এই ক্লাবেরও অবদান রয়েছে।