সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: জঙ্গিপুর মহকুমায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের। লকডাউন অমান্য করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন বাইরে বেরচ্ছেন বহু মানুষ। গ্রাম থেকে শহরের দোকানগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। কিছু মানুষের এই কাণ্ডজ্ঞানহীনতার ফলে আতঙ্কিত এলাকার সচেতন মানুষজনও। তাঁরা বাইরে না বেরলেও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সচেতনতা বাড়ানোর সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিস ও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন অনেকে। জঙ্গিপুরের সংসদ সদস্য তৃণমূলের খলিলুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। অকারণে বাইরে বেরনো যাবে না। সরকারি নির্দেশ মেনে চলতেই হবে। দু’সপ্তাহ আগে জঙ্গিপুরে প্রথম চারজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ফলে বাইরের লোকজনকে এলাকায় ঢোকা বন্ধ করতে অনেকে নিজেদের এলাকা বাঁশ ও খুঁটি দিয়ে বেড়া দিলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই আগের মতোই সবকিছু চলছে। এদিকে রবিবার সাগরদিঘিতে আরও দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকের অভিমত, এব্যাপারে গ্রাম ও শহরের কোনও পার্থক্য নেই। গ্রামের মানুষজন প্রথম থেকেই এলাকায় খেয়ালখুশি মতো ঘোরাফেরা করলেও বর্তমানে শহরের দোকান ও বাজার ভিড়ে ঠাসা অবস্থা। শহরের রাস্তায় বহু মানুষ বেরচ্ছেন, গাড়িও চলছে। ফলে এই ভিড় দেখে ঘরবন্দি হয়ে থাকা মানুষজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। মহম্মদপুরের বাসিন্দা তথা গিরিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক আসিফ আহমেদ বলেন, খুব ভয় ও আতঙ্কে আছি। প্রথমদিকে মানুষজন লকডাউন মেনে চললেও এখন তা আর কেউ মানছেন না। একশ্রেণীর অসচেতন মানুষের জন্য করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়বে। তাছাড়া লকডাউনে শিথিলতার কারণেও মানুষজন দোকান ও বাজারগুলোয় ভিড় জমাচ্ছেন। ফলে পুলিস ও প্রশাসনের উচিত আরও তৎপর হওয়া।
রঘুনাথগঞ্জ গোপালনগরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মহুয়া রায় বলেন, খুব ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে একদম বেরচ্ছি না। ভাবছি এবছর আর ছেলেকে স্কুলে পাঠাব না। তবে, বাইরে এত মানুষ দেখে আরও ভয় করছে। সরকারের উচিত আরও কঠোর হওয়া। না হলে আগামী দিনে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। রাধানগরের গৃহবধূ রোজিনা বিশ্বাস বলেন, আমি নিজে ও ছেলেমেয়েদের বাইরে বেরতে দিই না। এমনিতেও কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু, প্রতিদিনই করোনা পজিটিভের খবর আসায় শহরে ও পাশের বিপণীতে যেতে ভয় করছে। তাছাড়া, দোকানগুলোতেও এত ভিড় দেখে যেতে আর সাহস করে না। জঙ্গিপুরের এসডিও গান্ধর্ব রাঠোর বলেন, আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। সরকারি নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।