অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
এই করোনা ভাইরাস সবশ্রেণীর মানুষের জন্যই সর্বনাশ ডেকে এনেছে। ধনী ব্যবসায়ীরা মন্দার জেরে চিন্তিত। মধ্যবিত্ত কাজ হারানোয় গৃহবন্দি হয়ে হতাশাগ্রস্ত আর নিম্নবিত্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে চলেছেন বাড়ি ফেরার জন্য। দু’মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলার পর ধীরে ধীরে বাজার স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে রেস্তেরাঁ চালু করার কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। আর এতেই মন ভারাক্রান্ত ভোজনরসিক বাঙালির। পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে নানা সুস্বাদু খাবার রেস্তরাঁয় খেতে না পেয়ে মন খারাপ। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে বসে মোগলাই, এগরোল সহযোগে আড্ডার অভাব বোধ করছেন। কিন্তু করোনা অনেক শিক্ষা দিয়ে চলেছে। তাই আড্ডা বা ফাস্টফুড থেকে বিরত থাকা বাঙালির কাছে বড়ই কঠিন। বাঙালির এই দুর্বলতাকেই হাতিয়ার করে লকডাউনে বহু গৃহবধূ বাড়িতে বসেই নতুন ব্যবসা শুরু করেছেন। করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত আসানসোল-দুর্গাপুরের বহু বাসিন্দাই চাইছিলেন ভিন্ন স্বাদের বাড়ির রান্না। সেটাই শুরু হয়েছে শিল্পাঞ্চলে। সোশ্যাল সাইটে নজর রাখলেই দেখা যাচ্ছে, দুই মেগা সিটিতেই প্রতিদিন গজিয়ে উঠছে নতুন নতুন হোম ডেলিভারি দেওয়ার পেজ। সেখানে বাহারি রান্নার বিজ্ঞাপন। তবে শুধু সখের অর্ডার নয়, এই সময়ে পরিচারিকারা কাজে আসতে পারছেন না, তাই অনেক বাড়িতে রান্না করা খাবারের প্রয়োজনীয়তা ছিল। বিশেষ করে দুই শহরেই বহু বৃদ্ধ, বৃদ্ধা একা রয়েছেন, যাঁদের পরিচারিকা না আসায় সমস্যা হচ্ছে। এদিকে স্বাস্থ্যের কারণে তাঁদের কম তেল-মশলা যুক্ত খাবার প্রয়োজন। এই সব মানুষেরও চাহিদা মেটাচ্ছেন গৃহবধূরা। ঘরোয়া খাবার বাড়িতে বসেই ডেলিভারি পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বয়স্ক মানুষজনও। কার্যত কোনওরকম বাড়তি পুঁজি না নিয়েই ব্যবসা বাড়তে থাকায় গৃহবধূরাও খুশি।
এই সময় বহু বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি বয়রা কাজ হারিয়েছেন। কম টাকার বিনিময়ে তাঁদের দিয়েই বাড়ি বাড়ি রান্না করা খাবার পাঠাতে পারছেন সদ্য স্বনির্ভর হওয়া বধূরা। কাজ পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে অনেক ডেলিভারি বয়।
দুর্গাপুরের গৃহবধূ দীপিকা সরকার, রীতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনেকদিন ধরেই নিজে কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল। রান্না করতে ভালো লাগে। তাই এই অবস্থায় এটা শুরু করেছি। একইভাবে আসানসোলের সোনালি চট্টোপাধ্যায়, রনিতা দে বলেন, বহু বাড়িতেই এখন পরিচারিকা আসছেন না। বয়স্কদের নিজেদের রান্না করে খেতে সমস্যা হচ্ছিল। তাঁরা আমাদের এই উদ্যোগে খুশি।