অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
গত বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটি দিন। এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি শান্তিপুর ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। জায়গায় জায়গায় পড়ে রয়েছে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। কোথাও গাছ পড়ে বাড়ি ভেঙেছে। কোথাও আবার উড়ে গিয়েছে টিনের চাল। এলাকার অনেকের বক্তব্য, আয়লা, বুলবুলের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল উম-পুন। সুপার সাইক্লোনের দাপটে কতটা লণ্ডভণ্ড হয়েছে এলাকা সেটা এখানকার মানুষের হাহাকারে স্পষ্ট। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গিয়েছে ঘরবাড়ি। ব্লকের বহু বাড়ি আংশিক এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির তালিকায় রয়েছে চাষের জমি, ফলের গাছ। বহু গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ কেবল ও মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। শান্তিপুর থানা এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পুলিসের উদ্যোগে ড্রোন ওড়ানো হয়। শান্তিপুর ব্লকে বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ে ৭৮০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ২৮৫৩টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রানাঘাটের মহকুমা শাসক হরসিমরন সিং বলেন, উম-পুনের দাপটে আমাদের মহকুমায় চাষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বাড়ি, প্রচুর গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসন ও বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা এলাকা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে গেলেও পরিষেবা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। শান্তিপুরের দাদ্দেনিকারী পাড়ায় ঝড়ের দিন রাতে ঘুমের মধ্যে চাপা পড়েন গৃহবধূ ফরিদা বেওয়া। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে আঘাত লাগে। ঝড়ে শান্তিপুর রেল কোয়ার্টারের বাসিন্দা দিলীপ বাসফোরের আসবাবপত্র, টিভি সহ ভেঙে পড়ে ঘর। শান্তিপুর শহরের গোপালপুর পঞ্চায়েতের নৃসিংহপুর এলাকার বেশ কিছু টিন, টালি দেওয়া বাড়ি ভেঙে পড়ে। নৃসিংহপুর পুরাতন হালদারপাড়ার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী মিঠুন হালদার, প্রতিবন্ধী যুবক পেশায় দিনমজুর বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই ঘরে গাছ পড়ে পাকা দেওয়াল সহ টিনের চাল ভেঙে গিয়েছে। আমরা আগে থেকে পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। বাড়ি ফিরে দেখি সমস্ত জিনিস জলে ভিজে গিয়েছে। প্রশাসনের থেকে এখনও কোনও সাহায্য পাইনি। শান্তিপুর ব্লকের ঘোড়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ রায় বলেন, ঝড়ে বিশাল বড় একটা গাছ পড়ে কারখানা ভেঙে গিয়েছে। কারখানার পাশেই বাড়ি। সেখানেও গাছের কিছুটা অংশ পড়ে সিঁড়ির ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একেই লকডাউনে ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এত ক্ষতি কীভাবে সামাল দেব জানি না।