অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনও টুইট করতে না করতেই পরীক্ষার্থীরা কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ছে সেখানে। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন বয়ানে কাতর আবেদন রাখছে তারা। কেউ বলছে, পরীক্ষা দিতে গেলেই করোনায় তার মৃত্যু হবে। কেউ আবার বলছে, আমি বাড়ির একমাত্র সন্তান। মা-বাবা আমাকে নিয়ো খুব ভয় পাচ্ছে। কারণ ১৮ বছর না-হওয়ার কারণে আমরা পরীক্ষার্থীরা কেউ টিকা পাইনি। শুরু করা হয়েছে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ক্যাম্পেইনও। যদিও জুনে পরিস্থিতি কেমন থাকবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সম্ভবত সে কারণেই পরীক্ষা বাতিলের মতো বড় সিদ্ধান্ত এখনই ঘোষণা করেনি রাজ্য সরকার।
তবে শিক্ষা মহলের একাংশ এ ধরনের প্রচার নিয়ে কিছুটা সন্দেহও প্রকাশ করেছে। শুধুই কি করোনার ভয়, নাকি প্রস্তুতিহীনতা, সেই প্রশ্ন উঠছে। এক শিক্ষক বলেন, জীবনের প্রথম পরীক্ষা নিয়ে উৎসাহে ফুটতে থাকার কথা ছাত্রছাত্রীদের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই উৎসাহে ভাটা পড়া স্বাভাবিক। তবে যারা মাস দেড়েক আগে থেকেই ফেসবুক ট্যুইটারে অ্যাকাউন্ট খুলে পরীক্ষা বাতিলের সঙ্ঘবদ্ধ দাবি জানাচ্ছে, তাদের আসল ভয়ের কারণ নিয়ে কিছুটা সন্দেহ হতেই পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, অ্যাকাউন্টগুলিতে কোনও আসল নাম বা ছবি নেই। তাই সেগুলি যে ভুয়ো, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবার যে অ্যাকাউন্টগুলিতে নাম বা ছবি রয়েছে, সেগুলি নিয়েও সংশয় রয়েছে। মার্চ বা এপ্রিলেই সেগুলি খোলা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনেকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এক পরীক্ষার্থী। দেখা যাচ্ছে, করোনার ভয়ে পরীক্ষা বাতিলের ভয়ে সে সরব হলেও বামেদের ব্রিগেডে সে যোগ দিয়েছে। তুমুল ভিড়ের মধ্যে ঢুকে ডি রাজা বা বাদশা মৈত্রর মতো নেতা বা সেলেব্রিটি বাম সমর্থকদের সঙ্গে সে হাসিমুখে ছবি তুলেছে। শুধু তাই নয়, অনেকের সোশ্যাল মিডিয়ার ক্রিয়াকলাপ দেখে মনেই হবে না, তারা করোনায় ভীত অথবা পরীক্ষা সামনে রয়েছে। অনেকেই বাইরে ঘুরে বেড়ানোর সাম্প্রতিক ছবি পোস্ট করছে। কারও আবার দিনে খান পনেরো পোস্ট দেখে মনেই হবে না, সে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোনও কোনও শিক্ষকের ধারণা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্তানদের এই ক্রিয়াকলাপের কথা জানেনই না অভিভাবকরা। পরীক্ষার মধ্যে ছাত্রদের খেপিয়ে তোলার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও আনছে শিক্ষকদের একাংশ। ভোট চলাকালীন ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে এ ধরনের পোস্ট করে সরকারকে অমানবিক প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আশঙ্কা সেই শিক্ষকদের।