নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ফের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল বেলডাঙার মির্জাপুরের ভাগীরথী নদীতে। শুক্রবার নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল নবম শ্রেণির এক ছাত্র। তলিয়ে যাওয়া ওই ছাত্রের নাম আতিবুর শেখ(১৬)। তার বাড়ি বেলডাঙার কাপাসডাঙার পশ্চিমপাড়া এলাকায়। এদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কাপাসডাঙায় আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিল আতিবুর। আত্মীয়ের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে ভাগীরথী নদী। ওই অংশে চর পড়ে যাওয়ায় প্রায়দিনই বেলডাঙা, বহরমপুর, হরিহরপাড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই ঘুরতে আসে। দিনকয়েক আগেও অনেকে স্নান করতে নামত সেখানে। ৩০মে এক কিশোর ডুবে মারা যাওয়ার পর ওই অংশে নদীতে নামতে নিষেধ করে পুলিস-প্রশাসন। পাহারা দেওয়ার জন্য দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়। যদিও এদিন সকলের চোখের আড়ালে চার কিশোর জলে নেমে যায়। তখনই ঘটে বিপত্তি। ভাগীরথীর স্রোতে তলিয়ে যায় আতিবুর। অপর এক বন্ধু তাকে উদ্ধারের জন্য জলে ঝাঁপ দিলেও তার নাগাল পায়নি। সে জলের ঘূর্ণির মধ্যে পড়ে নিমেষে তলিয়ে যায়। বাকি বন্ধুদের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরা খোঁজার চেষ্টা করেন। বেলডাঙা থানার পুলিসও বেশ কিছুক্ষণ নৌকা নিয়ে নদীতে তল্লাশি চালায়। তারপর বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের অধিকারিকদের খবর দেওয়া হলে, ডুবুরি নামিয়েও তল্লাশি শুরু হয়।
পুলিস জানিয়েছে, আমার তল্লাশি শুরু করেছি। ঘটনার পর বিশাল ভিড় হয়ে যায় ঘাটে। আমরা সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দিয়ে নৌকা নামিয়ে জলের মধ্যে সন্ধান চালাচ্ছি। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরও উদ্ধার কাজে নেমেছে।
বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের জেলা আধিকারিক কমল চক্রবর্তী বলেন, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ডুবুরি টিম এবং স্পিড বোট পাঠিয়েছি। তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত কিশোরের সন্ধান মেলেনি।
আতিবুরের এক আত্মীয় বলেন, ওরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের বাড়িতে মাংস দিতে এসেছিল। তারপর ভাগীরথীতে অনেকের স্নান করে শুনে সেখানে যায়। কখন যে চার বন্ধু মিলে জলে নেমে গিয়েছে, আমরা বুঝতে পারিনি। তিন বন্ধুর চিৎকার শুনে আমরা সকলে ঘাটে আসি। তারপর ওর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই এখানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এক কিশোরের মৃত্যুর পর এই ঘাটে নামায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। পুলিসের টহল দেওয়ার কথা। তারপরেও কী করে এখানে ওই কিশোররা জলে নামল, সেটা দেখা দরকার। পুলিসের আরও কড়া নজরদারি প্রয়োজন।