কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
প্রথমদিন মঞ্চস্থ হয় ‘কালরাত্রি’। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের উত্তপ্ত, ভয়াবহ দিনগুলোর প্রেক্ষাপটে নাটকের বিস্তার। স্বাধীনতার জন্য আকূল সমস্ত মানুষ। আন্দোলনের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। মারা পড়ে বহু ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক। সাংঘাতিক আহত হয় এক ছাত্র। সৌভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়। কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন এক শিক্ষক। যার নির্দেশে চলেছিল ছাত্র আন্দোলন। অবশেষে দেশ স্বাধীন হয়। জন্ম হয় বাংলাদেশের। ৭১-এর সেই রক্তঝরা দিনগুলো, শিক্ষক এবং তাঁর ছাত্রের স্মৃতিচারণার মধ্যে দিয়ে ফিরে আসে। অতীতের স্মৃতি জারিত করে বর্তমানকে, মানে শিক্ষকের নাতনিকে। ভবিষ্যতের এগিয়ে চলার পথে যা পাথেয় হয়ে উঠবে।
৭১-এর যুদ্ধের টুকরো টুকরো অডিও-ভিসুয়াল ক্লিপিংস, চমৎকার আলো, শব্দ এবং উপযুক্ত মঞ্চায়নের সাহায্যে যুদ্ধের এক বাস্তব স্বাদ এনে দিতে সক্ষম হয়েছেন নির্দেশক ওয়াহিদুল ইসলাম।
লাসিমা শিরীন হোসাইনের গল্পের নাট্যরূপ দিয়েছেন ডঃ তানবীর আহমেদ সিডনী। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা ছিল ভারতের। কিন্তু তার সামান্যতম উল্লেখ নেই কেন? ৭১-এ কি রুণা লায়লার গাওয়া ‘দমা দম মস্ত কালান্দার’ গানটি সৃষ্টি হয়েছিল? প্রশ্ন আরও কিছু এসে পড়ে। সে যাই হোক, শিল্পীদের সম্মিলিত সুন্দর অভিনয়, ‘কালরাত্রি’-কে উপভোগ্য করে তোলে।
দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হয় পদাতিকের ‘গুনজান বিবির পালা’। ‘মহুয়া’ নাট্যদল মঞ্চস্থ করবে ‘গুনজান বিবির পালা’। তারই প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণে দলে এখন নানা সমস্যা। দলের নির্দেশক মনোরঞ্জন অধিকারী দলকে টিকিয়ে রাখতে সংসারের কথা না ভেবে সর্বস্ব সঁপে দিয়েছেন নাটককে। মূল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সিনেমার এক নামী অভিনেত্রীকে রাজি করানো হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও কি নাটক মঞ্চস্থ হতে পারে? মনোরঞ্জন কি বাঁচাতে পারেন তাঁর দলকে? নাকি নিজেই পালিয়ে বাঁচেন! এই পর্বটি ‘গুনজান বিবির পালা’র দ্বিতীয় পর্ব। নাটক পাগল মানুষটার ব্যর্থতা, বেদনার সঙ্গে রিলেট করা গেলেও, প্রথম পর্বের ‘গুনজান বিবির পালা’-কে বড় বেশি সস্তার লেগেছে। মেয়ে সেজে পুরুষ অভিনেতাদের অঙ্গভঙ্গি, সংলাপ কোথাও কোথাও শালীনতাকে অতিক্রম করেছে। কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে, মাঝে মাঝেই গুলিয়ে যাচ্ছিল। জানি না এটা পালাগানের শর্ত কিনা!
গুনজান বিবির পালা-র মাধ্যমে সাত ভাই চম্পার গল্পকে তুলে ধরা হয়েছে। রাজার ছোট রানির গর্ভবতী হওয়াটা রাজার মনে এবং রাজ্যে আনন্দ এনে দেয়। রানির গর্ভযন্ত্রণার সঙ্গে মনোরঞ্জন অধিকারীর যন্ত্রণাকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। একটা নাটক নাট্যকারের কাছে সন্তানতুল্য। যতক্ষণ না নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে, ততক্ষণ পরিচালকের মনে চলে টেনশন আর যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণাই গর্ভযন্ত্রণার সামিল। দুটো বেদনাকে এভাবেই হয়ত মেলাতে চেয়েছেন নির্দেশক সায়ের সিদ্দিকী। কিন্তু দুই পর্বের খাপছাড়া ভাবটা তাতে ঢাকা পড়ে না। এখানেই ‘গুনজান বিবির পালা’র দুর্বলতা।