কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
চলতি সপ্তাহের শুরুতে লন্ডনে সম্পাদিত এই সাপ্তাহিক পত্রিকারই শাখা ‘ইকনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ প্রকাশিত ‘বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে’ এক ধাক্কায় ১০ ধাপ নীচে নেমে গিয়েছে ভারত। যার কারণ হিসেবে মোদি সরকারের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্তকে দায়ী করা হয়েছিল। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার পত্রিকার নতুন সংখ্যার প্রচ্ছদ ট্যুইট করে ‘দ্য ইকনমিস্ট’। প্রচ্ছদের লেখা ‘অসহিষ্ণু ভারত’। নীচে একটি লাইন, ‘কীভাবে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের বিপদ ডেকে আনছেন মোদি’। প্রচ্ছদ নিবন্ধের শিরোনাম আরও ঝাঁঝালো, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে বিভাজনে ইন্ধন দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি’।
‘ভারতের ২০ কোটি মুসলিমের আশঙ্কা, প্রধানমন্ত্রী হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করতে চলেছেন।’ এই লাইনটি দিয়েই শুরু হচ্ছে নিবন্ধটি। প্রথমেই সরাসরি সিএএ এবং এনআরসি প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, দেশের ২০ কোটি মুসলিমের অধিকাংশেরই নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার উপযুক্ত নথি নেই। তাই তাঁরা ভিটেমাটি ছাড়া হওয়ার ভয় পাচ্ছেন। আর সরকার সিএএ-এনআরসির জালে আটকে পড়া মানুষদের জন্য শিবির তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। রামমন্দির আন্দোলন ও বিজেপির উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে সরাসরি লেখা হয়েছে, ‘ধর্ম এবং জাতীয়তার ভিত্তিতে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছেন মোদি এবং বিজেপি। প্রকৃত নাগরিকদের পঞ্জিকরণ আসলে অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করার পরিকল্পনারই অংশ। যা দেশের ১৩০ কোটি মানুষের উপর প্রভাব ফেলবে। তালিকা তৈরি, তাকে চ্যালেঞ্জ জানানো, সংশোধন— সব মিলিয়ে বছরের পর বছর ধরে এটি মানুষকে উত্তেজিত রাখবে। পাশাপাশি, যা নিয়ে গত নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই ল্যাজেগোবরে হচ্ছে বিজেপি, সেই অর্থনীতি সহ অন্যান্য কঠিন বিষয় থেকে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবে।’
কীভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ সরকার তিনটি প্রতিবেশী দেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে, সেই প্রশ্নও তুলেছে এই নিবন্ধ। কার্যত বিরোধীদের ভাষায় লেখা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় টিকে থাকার মূলমন্ত্র, ‘মুসলিমরা দেশের পক্ষে বিপজ্জনক। তারা সবসময় হিন্দুদের দমিয়ে দেশকে পাকিস্তানের হাত বেচে দিতে চায়। মোদি অঙ্কের মতো বুঝে ফেলেছেন যে ভারতীয় ভোটারদের একটা অংশ তাঁর এই ইঙ্গিতের সঙ্গে সহমত। এটাই তাঁর ক্ষমতায় টিকে থাকার পক্ষে যথেষ্ট।’
এই নিবন্ধ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিজেপি। দলের বিদেশ নীতির দায়িত্বে থাকা নেতা বিজয় চৌঠাইওয়াল সরাসরি ‘দ্য ইকনমিস্ট’কে ‘উদ্ধত এবং ঔপনিবেশিক মানসিকতার’ বলে তোপ দেগেছেন। ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা ভেবেছি ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালেই চলে গিয়েছে! কিন্তু দ্য ইকনমিস্টের সম্পাদকরা এখনও ঔপনিবেশিক সময়েই বাস করছেন। মোদিকে ভোট না দেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের নির্দেশ মানেননি ৬০ কোটি ভারতীয়। এতেই ওঁদের গোঁসা হয়েছে।’
এদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেও ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে আশার আলো জাগিয়েছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। এদিন দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে তিনি বলেন, ‘ভারতের মতো একটি বিশাল বাজার নিম্নমুখী। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস এটা সাময়িক। আমাদের আশা আগামীদিনে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’