ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি। শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
হিন্দু হিসেবে তিনি যেমন পুজোআচ্চা, স্তোত্রপাঠ আর মঙ্গলারতিতে অভ্যস্ত, তেমনই অন্য ধর্মকে সম্মান করার ক্ষেত্রেও কোনও দ্বিধা বা সঙ্কোচ তাঁর মধ্যে কখনও কাজ করে না বলে সাফ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মমতা বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আসুন এটাই সবাইকে বোঝাই। আজ দেখে ভালো লাগছে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ—সব সম্প্রদায়ের মানুষকে আমন্ত্রণ করে এনে আপনারা পাশাপাশি বসিয়েছেন। এটাই মহানুভবতা। এটাই আমাদের ধর্ম শিখিয়েছে। আমাদের ধর্ম বিশ্বজনীন, সর্বজনীন আর সনাতন। এই ধর্ম সবাইকে আপন করে নিতে শিখিয়েছে, আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিখিয়েছে। ধর্ম মানে কী? নিজের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ধর্ম মানে সভ্যতা, ধর্ম মানে সংস্কৃতি, ধর্ম মানে সম্প্রীতি, ধর্ম মানে একতা আর ধর্ম মানে সবাইকে ধারণ করা অর্থাৎ আপন করে নেওয়া। স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব, গান্ধীজি, সুভাষচন্দ্র বসু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো পথদ্রষ্টাদের কাছ থেকে এটাই শিখেছি। সেই পথেই চলছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ আর রামকৃষ্ণ মিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি।
কিন্তু হিন্দু ধর্মের এই ব্যাখ্যা কেন তিনি দিলেন, তাও স্পষ্ট করেছেন মমতা। বলেছেন, ধর্ম মানে শুধু মুখের ভাষা নয়। সঠিকভাবে পথ চলতে, আর্তের পাশে দাঁড়াতে, মহিলাদের সম্মান করতে, বিপদে-দুর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে, বিভেদ আর বিভাজনের কথা না বলাটাই শেখায় ধর্ম। এরপর গেরুয়া শিবিরের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর খোঁচা, আজকাল কারও কারও মাথায় ধর্মের উদ্ভট সব চিন্তাভাবনা আসছে। প্রচার হচ্ছে, আমি থাকব, তুমি বাদ। আমি এই মতবাদে বিশ্বাসী নই। যাদের মস্তিষ্কে মরুভূমি, তারাই এসব উদ্ভট চিন্তাভাবনাকে সামনে নিয়ে আসছে। আমরা নিজেদের মস্তিষ্ককে সবুজ রাখতে চাই। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দের আহ্বানে উপস্থিত হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ সহ নানা সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সবার কাছে মুখ্যমন্ত্রীর উদাত্ত আহ্বান, আসুন, প্রাচীন মুনি-ঋষিরা যে ধর্মের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন, তাকে মানবধর্ম হিসেবে দেখি, সবার পাশে দাঁড়াই। দাঙ্গা নয়, দাঙ্গা ঠেকাই। রক্ত ঝরিয়ে ভাগাভাগি নয়, রক্ত দিয়ে দেশ গড়ি। আমাদের প্রিয় দেশের জন্য। মমতার কথায়, আমি যা ভিতরে বলি, তা প্রকাশ্যেই বলি। এতটুকু বলার বুকের পাটা আমার আছে। আমার ধর্ম বিশ্বজনীন, বিশ্ব বাংলা, যা জগৎসভায় ফের শ্রেষ্ঠ আসন নেবেই।