শ্লেষ্মা ও বাতজ রোগ বৃদ্ধিতে কাজকর্মে ব্যাঘাত। গৃহাদি নির্মাণ বা সংস্কারে শত্রুর বাধা। ধর্মে মতি। ... বিশদ
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই এই সিরাপ এদেশে নিষিদ্ধ। কারণ এই ওষুধের শিশি মূলত নেশাড়ুরাই বেশি কিনত। দেশে ও বিদেশে এই সিরাপের ভালো চাহিদা রয়েছে। কম বিনিয়োগে দ্বিগুণ লাভের আশায় এই ব্যবসায় নামে দীপেন চট্টোপাধ্যায়, সুরজ মহানন্দ, জাভেদ আক্তাররা। এই সিরাপ দেশে বিক্রি করলে দ্বিগুণ লাভ, আর বিদেশে পাচার করতে পারলে লাভের অঙ্ক চারগুণ হয়ে যায়। ধৃত ওই তিনজন জেরায় পুলিসকে জানিয়েছে, তারা মধ্যপ্রদেশ থেকে ২৬ পেটি নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ নিয়ে এসেছিল। যেগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। তাদের বক্তব্য, মধ্যপ্রদেশেই চোরাগোপ্তা উপায়ে তৈরি হতো এই নিষিদ্ধ সিরাপ। অভিযুক্তরা বাণিজ্যিক এলাকা ছেড়ে সাঁকরাইল থানা এলাকার আন্দুল স্টেশন রোডের মতো মধ্যবিত্ত এলাকা বেছে নিয়েছিল একটাই কারণে, যাতে কেউ সন্দেহ না করে। ভাড়া নিয়েছিল গোটা বাড়িটাই। এখান থেকেই ওড়িশা এবং বাংলাদেশে পাঠানো হতো কোডিন গ্রুপের ওষুধের শিশি।
তদন্তকারীদের দাবি, তারা ১০০ এমএল-এর শিশি কিনত মাত্র ৮০ টাকায়। নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের শিশি তারপর পেটিবন্দি হয়ে চলে আসত হাওড়ায়। এখান থেকে যেত ওড়িশার সম্বলপুরে। সেখানে মাদক হিসেবে সিরাপের শিশি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। আর বাংলাদেশে যে সিরাপ পাচার হয়, তা সেখানে বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ বাংলাদেশি টাকায়। অর্থাৎ চোরাপথে সীমান্ত পার করতে পারলেই লাভের অঙ্ক চার থেকে পাঁচগুণ হয়ে যায়। রাজ্য পুলিসের এক কর্তা বলেন, এই ধরনের সিরাপ কারও কাছে এক লিটার পাওয়া গেলেই তা ‘কমার্শিয়াল কোয়ান্টিটি’ হিসেবে বিবেচিত হয়। তখন তার বিরুদ্ধে মাদক ধারায় মামলা হয়। আন্দুল রোডের ওই বাড়ি থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ৬৯০টি কোডিন ফসফেটের শিশি উদ্ধার হয়েছে। এর থেকেই স্পষ্ট, পাচারের জন্যই ওই সিরাপ মজুত করা হয়েছিল।
তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, এই মাদক ব্যবসা রীতিমতো অক্টোপাসের মতো ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ধৃত তিনজন সেই বিরাট অক্টোপাসের এক-একটি শুঁড়। পাচার চক্রের পিছনে রয়েছে আরও বড় মাথা। আপাতত সেই মাথার খোঁজেই তদন্ত চলছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং অন্যান্য সূত্রের মাধ্যমে কিং পিনের দুয়ারে পৌঁছতে চাইছে পুলিস।