আকস্মিক পত্নীর/ পতির স্বাস্থ্যহানিতে মানসিক চিন্তা। কাজকর্মে কমবেশি বাধা থাকবে। আর্থিক উন্নতি হবে। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার সাতসকালেই বেজে উঠেছে মুঠোফোন। সারাদিনই সে ব্যস্ত। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি থেকে আত্মীয় পরিজনের প্রশ্ন যেন আর শেষ হতে চায় না। তবে সুব্রত ভট্টাচার্য যে হার মানার লোক নন। অবলীলায় ঘেঁটে চলেছেন সুনীল ইতিহাস, যে পথ চলা শেষ হবে আগামী ৬ জুন। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। কাকতালীয়ভাবে এই শহর জানে সুনীলের প্রথম সবকিছু। ২০০২ সালে মোহন বাগান মাঠে আয়োজিত ট্রায়ালে তাঁকে চিনতে ভুল করেননি বহু যুদ্ধের নায়ক বাবলু। বাকিটা সবারই জানা। প্রিয় ছাত্র থেকে জামাই হয়েছেন সুনীল। মনের ডায়েরির ধূসর পাতা খুলে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা পরিহিত সুব্রতর স্মৃতি রোমন্থন, ‘প্রথম দেখাতেই মন জিতে নেয় ও। বুঝেছিলাম, অনেক দূর পৌঁছবে। সেদিন অনেকেই ভিন্ন মত পোষণ করেছিলেন। তবে আমার পরামর্শেই কর্তারা ওকে দলে নেন। তারপর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সাফল্যের খিদে সুনীলকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। শুধু ফুটবলার নয়, মানুষ হিসেবেও ও মহৎ।’
কুয়েত ম্যাচের পরই জামাইয়ের অবসর, জানতেন শ্বশুর সুব্রত। সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেই একদিন না একদিন থামতেই হয়। সুনীল চাইলে হয়তো খেলা চালিয়ে যেতে পারত। তবে আমার মতে, ও ঠিক সময়ে দেশের জার্সি তুলে রাখছে।’ গত কয়েক বছর কার্যত একাই ভারতীয় আপফ্রন্টকে টেনেছেন সুনীল। তাঁর শূন্যস্থান কি পূর্ণ হবে? উত্তর দেওয়ার সময় রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিলেন বাবলু, ‘শূন্যেরে করিব পূর্ণ, এই ব্রত লহিব সদাই’। অনেকে চেষ্টা করবে। তবে ওর অভাব ঢাকা কঠিন। সুনীল বর্ন লিডার। ফুটবলার অথবা ক্যাপ্টেন সুনীলের মধ্যে আমি এগিয়ে রাখব দ্বিতীয়টিকে।’
কোচ ও ফুটবলার হিসেবে সুব্রত ভট্টাচার্যের সাফল্য অনেক। তবে শেষ কয়েক বছর নিজেকে কার্যত গুটিয়ে রেখেছেন তিনি। খেলা দেখতে মাঠেও আর যাওয়া হয় না। তবে ৬ জুন সুনীলের বিদায়ী ম্যাচে কি গ্যালারিতে হাজির থাকবেন তিনি? একরাশ অভিমান ঝরে পড়ল বাবলুর গলায়। বললেন, ‘আমায় এখন আর কেউ কোনও ম্যাচের আমন্ত্রণপত্র পাঠায় না। তাহলে কেন যাব? কেউ ডাকলে ৬ জুন অবশ্যই মাঠে থাকব।’
গোধূলি এখন অতীত। সন্ধ্যা ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সুব্রত ভট্টাচার্যের মনও ভারাক্রান্ত। সুনীল আকাশ এখন কালো হলেও সেদিকে তাকিয়ে তিনি। খুঁজে নিচ্ছেন সেই মোহন বাগান মাঠ, সেই ১৬ বছরের কিশোরকে।