কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। ব্যবসায় অগ্রগতি ও প্রসার। অর্থাগম যোগ শুভ। স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ... বিশদ
রাজ্য পুলিস সূত্রে খবর, ব্যাঙ্ক আধিকারিকের বেশে বর্ধমানের ওই গ্রাহকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল এক প্রতারক। গৃহস্থকে বলা হয়েছিল, আপনার কাছে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের যে ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, তার ‘লিমিট’ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। ‘ব্যাঙ্ক আধিকারিক’ সেজে আসা ওই ব্যক্তির কথায় আশ্বস্ত হয়ে তাতে সায় দেন গ্রাহক। তখন চাওয়া হয় ক্রেডিট কার্ড এবং গ্রাহকের মোবাইল ফোন। সুপ্রকাশবাবুর বয়স ৫৮ ছুঁই ছুঁই। সাত-পাঁচ না ভেবেই প্রতারকের ‘ইচ্ছা’ পূরণ করেন তিনি। ক্রেডিট কার্ডের নম্বর এবং গ্রাহকের মোবাইল ফোনে আসা ওটিপি কাজে লাগিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার জিনিস নিজের ঠিকানায় কিনে নেন ওই ভুয়ো ব্যাঙ্ক কর্মচারী। তদন্তে নেমে পুলিস ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এমনই একাধিক কেস দায়ের হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন থানায়। রাজ্য পুলিসের এক কর্তা জানিয়েছেন, দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের প্রতারণায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে অধিকাংশই প্রবীণ এবং টেক-স্যাভি নন, এমন মানুষজন রয়েছেন। তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বলা হচ্ছে, ক্রেডিট কার্ড রয়েছে কি না। কেউ যদি বলেন যে, তাঁর কার্ড নেই, তাহলে অন্য পন্থা অবলম্বন করছে প্রতারকরা। তখন বলা হচ্ছে, তাঁদের ডেটাবেসে ওই গ্রাহকের নামে একটি ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। সেটি বাতিল করতে হলে গ্রাহককে একটি ফর্ম ফিল-আপ করতে হবে। এরপরই ফাইল থেকে একটি ফর্ম বের করে দিচ্ছেন তাঁরা। পুলিস জানাচ্ছে, আদতে সেই ফর্ম নতুন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার জন্য। প্রবীণ গ্রাহককে ভুল বুঝিয়ে সেই ফর্মে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপর সেটি এজেন্টের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে ব্যাঙ্কে। তার ভিত্তিতে নতুন ক্রেডিট কার্ড আসছে গ্রাহকের বাড়িতে। কার্ড ইস্যু হয়ে গেলে ফের গ্রাহকের বাড়িতে হানা দিচ্ছে প্রতারকরা। নতুন ক্রেডিট কার্ডটি বাতিলের অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। তদন্তকারীদের অনুমান, ছদ্মবেশীরা আদতে ক্রেডিট কার্ড তৈরির সংস্থার প্রাক্তন এজেন্ট বা ওই সমস্ত বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত। কারণ, ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা এবং তার মাধ্যমে মোবাইলে আসা ওটিপিকে কাজে লাগিয়ে টাকা হাতানোর উপায় খুব ভালো মতো জানে প্রতারকরা।
রাজ্য পুলিস এ নিয়ে বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে। তাঁদের মতে, ব্যাঙ্কের তরফ থেকে কোনও আধিকারিক বাড়িতে এসে কাউকে ক্রেডিট কার্ড করান না। অ্যাকাউন্ট খোলার সময়েই সেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। পুলিস জানাচ্ছে, কোনও অপরিচিত ব্যক্তির হাতে কার্ড ও মোবাইল দেবেন না। পাশাপাশি, গ্রাহকের ক্রেডিট কার্ড না থাকলে তা বাতিল করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাই প্রতারকদের সেই টোপেও পা দিতে নিষেধ করছেন পুলিস কর্তারা। অপরিচিত কোনও ব্যক্তি ব্যাঙ্ক আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে বাড়িতে এলে তাঁদের কোনও নথি দেখাবেন না। প্রয়োজনে ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট ব্রাঞ্চে গিয়ে যোগাযোগ করবেন।