অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
এমনিতে এবার ভোটের আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি গেরুয়া শিবির। প্রচারে বেশ কয়েকবার রাজ্যে এলেও এনিয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিংবা সর্বভারতীয় জেপি নাড্ডা। কিন্তু, নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আলোচনা চলছে দু’টি নাম নিয়ে। একদিকে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, অন্যদিকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা। রবিবার ফলাফলের আভাস মিলতেই এই বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিল বিজেপির সহ সভাপতি তথা অসমের দায়িত্বে থাকা জয় পণ্ডাকে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সংসদীয় বোর্ড এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হিমন্ত যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে চান, সেটা কারও অজানা নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তাঁকে অনেক আগেই এই আশ্বাস দিয়েছিল। দলের অন্দরের খবর, বিগত কয়েক বছর ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতে তিনিই কার্যত বিজেপিকে ধরে রেখেছেন। এমনকী, ওই অঞ্চলে দল কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হলে অমিত শাহ চোখবুজে তাঁর উপর ভরসা করেন। এবারের নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন হিমন্ত। কেউ কেউ বলছেন, একা হাতে কঠিন ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি। তাই ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার হিসেবে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারে বসানো হোক।
শুধু দলীয় নেতা হিসেবেই নয়, অর্থমন্ত্রী হিসেবে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন হিমন্ত। এছাড়া, করোনা পরিস্থিতিও প্রায় একা হাতেই সামলেছেন। দিল্লি ও রাজ্যের নেতারাও এই নিয়ে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী হতে হিমন্তের কোনও বাধা নেই। দলীয় সূত্রের খবর, হিমন্তের পথের কাঁটা হতে পারে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সোনেওয়ালের ভাবমূর্তি। গত পাঁচবছরে তাঁর সরকার পরিচালনা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ্ব। কিন্তু, হিমন্তের মতো দলের মধ্যে তাঁর অতটা প্রভাব নেই। তবে শুধুমাত্র এই যুক্তি দেখিয়েই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াটা সহজ নয়।
অসমে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাজোট এগিয়ে রয়েছে ৪০টি আসনে। এনডিএর ৭৭টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৬২টিতে, জোটসঙ্গী অসম গণ পরিষদ (অগপ) এবং ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল) এগিয়ে রয়েছে যথাক্রমে ১০টি ও ৭টি আসনে। অন্যদিকে, বিরোধী কংগ্রেস ২৬টি, এআইইউডিএফ ১১টি এবং বোরোল্যান্ড পিপিলস ফ্রন্ট ৩টিতে এগিয়ে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিজেপি যদি ক্ষমতায় ফেরে, তাহলে তারাই হবে প্রথম কোনও অ-কংগ্রেস সরকার, যারা উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে পরপর দু’বার কুর্সি দখল করবে।