সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: ইন্টার স্টেট বাস সার্ভিস সোমবার থেকে শুরু হবে। দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি অনুমোদন দিয়েছে। যাবতীয় হেরিটেজ সাইট খুলে দেওয়া হয়েছে। পুরোদমে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা কমছে। এসবের কারণ দিল্লিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ হার কমতে শুরু করেছে। জুলাই মাসে হোম আইসোলেশনে থাকা কোভিড রোগীদের একজনেরও মৃত্যু হয়নি। মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে থাকা রোগীদের। গত ১৫ দিনে মোট ৬৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র সাত জনের মূত্যু হয়েছে হোম আইসোলেশনে। সেগুলি জুন মাসে। কিন্তু জুলাই মাসে এখনও পর্যন্ত কোনও হোম আইসোলেশন থাকা ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদ নেই। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে দিল্লিতে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হয়েছে ১০১ জন রোগীর। সেই সংখ্যা গত ১৫ দিনে কমে হয়েছে ৪৬। জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার জন সংক্রামিত হয়েছিলেন এই ভাইরাসে। এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ২ হাজারের নীচে। গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৮০০ মানুষ সংক্রামিত হয়েছেন। এই প্রবণতা থেকে দিল্লি সরকার এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক আশার আলো দেখছে। আর এই সঙ্গেই শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে কৃতিত্ব নেওয়ার লড়াই। বিজেপি দাবি করতে শুরু করেছে, যেদিন থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রক দিল্লি শহরের চিকিৎসা ব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে শুরু করেছে, তারপর থেকেই শুরু হয়েছে উন্নতির লক্ষণ। অন্যদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার বলেছে, রাজ্য যেভাবে প্রায় বাড়ি বাড়ি পরীক্ষা এবং প্রচুর কোভিড বেডের ব্যবস্থা করেছে, তারপরই এই সাফল্য আসছে। এই কৃতিত্ব নেওয়ার লক্ষ্যে দিল্লি সরকার তড়িঘড়ি বিবৃতি জারি করেছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০ জুলাই যেখানে মোট কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৮৯ জন। ১১ জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১ হাজার ৭৮১ জন। ১০ জুলাই সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৬৮। ১১ জুলাই সুস্থ হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। অর্থাৎ দ্রুত বাড়ছে কোভিড থেকে রক্ষা পাওয়ার হার। ১০ জুলাই মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের। ১১ জুলাই মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪। অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আক্রান্ত, মৃতের সংখ্যা কমছে। জুলাই মাসে যত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তারা সকলেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। কিন্তু বাড়িতে থাকা রোগীদের মৃত্যু হয়নি। এটা থেকে প্রমাণিত হয়, কম উপসর্গ থাকা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। হোম আইসোলেশনে যথাযথ বিশ্রাম ও দেখভাল হলেই সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, দিল্লির এই করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধীরে ধীরে কম হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলেও এখনও কোনও নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসা ঠিক নয়। আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে।