সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বরাবরই মহামারীতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে। মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। মৃত্যুহার কমিয়েছে। একথা প্রমাণিত সত্য। অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় টিকা বা ভ্যাকসিনের মতোই ‘ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম’ও এক ধরনের প্রতিষেধক বা ‘নোসোড’।
কিন্তু, কেন এতটা আশাবাদী চিকিৎসকরা? তাঁরা জানিয়েছেন, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ তৈরি হয় অসুস্থ প্রাণী বা মানুষের শরীর থেকে উপাদান নিয়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্তের কোষ এবং হাঁচি-কাশি থেকে এই ওষুধটি তৈরি হয়। তারপর তাতে অ্যালকোহল যুক্ত করে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এতটাই মিশ্রিত করা হয় যে ওষুধে আর মূল উপাদানের ‘বিষ’টি বিষাক্ত অবস্থায় থাকে না। বরং তা রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর একটি রূপ পায়।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি ডাঃ কৃষ্ণকুমার আগরওয়াল জানিয়েছেন, হোমিওপ্যাথি যে মহামারীতে অসম্ভব কাজের, তার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। দিকপাল চিকিৎসক ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এভাবেই স্কারলেট জ্বরের সফল চিকিৎসা করেছিলেন। এমনকী তাঁর সময়ে প্লেগ মহামারী দূরীকরণেও বড় ভূমিকা ছিল। প্রতিষেধক বা নোসোড নির্ভর চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির বড় ভূমিকা রয়েছে। যেমন মিসলস বা হামে মরবিলিনাম, গুটিবসন্তে ভেরিওলিনাম, ইনফ্লুয়েঞ্জায় ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম এবং ডিপথেরিয়ায় ডিপথেরিনাম। আমার মতে, করোনা উপদ্রবে প্রতিষেধক হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম যথেষ্ট কাজের।
বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ এবং সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি’র পরিচালন সমিতির সদস্য ডাঃ রথীন চক্রবর্তী বলেন, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এক ধরনের করোনা ভাইরাস থেকেই কিন্তু ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম তৈরি করা হয়। ফলে আমার ধারণা, করোনায় ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে পারে এই ওষুধটি। এর আগে আর এক ধরনের করোনা ভাইরাস সার্স সংক্রমণের সময়ও এই কথা উঠেছিল। তখন প্রয়াত ডাঃ ভোলানাথ চক্রবর্তী সহ বহু খ্যাতনামা হোমিওপ্যাথ কিন্তু এই কথাই বলেছিলেন। যেমন ইতিমধ্যেই প্রমাণিত যে জাপানিস এনসেফেলাইটিসে বেলেডোনা ৩০ খুব ভালো কাজ দেয়।
আর এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও ক্যালক্যাটা হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, যে কোনও মহামারীতেই হোমিওপ্যাথি যে অসম্ভব কার্যকর ওষুধ, তার প্রমাণ ইতিহাসে রয়েছে। আমি বলব শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম কেন, ফ্লু-এর সঙ্গে যদি প্রচণ্ড অবসন্নতা এবং আনুষঙ্গিক উপসর্গ থাকে, জেলসিনিয়াম ভালো কাজ দেয়। যদি গা হাত পা ব্যথা এবং আনুষঙ্গিক উপসর্গ থাকে রাসটাকস বহুক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। তবে এক্ষেত্রে যেখানে সুনির্দিষ্ট ধরনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে, সেখানকার ভাইরাস নিয়ে তার ‘জেনাস এপিডেমিকাস’ তৈরি করতে হবে। প্রয়োগ করে দেখতে হবে মানুষের মধ্যে কতটা কাজ দেয়।
হোমিওপ্যাথিক মহল সূত্রের খবর, ফিলাডেলফিয়ার হ্যানিম্যান কলেজের ডিন ডব্লু এ পিয়ারসনের পেশ করা তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২৬ হাজার ৭৯৫ জন ফ্লু আক্রান্তের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। সেখানেও দেখা যায় অসম্ভব ভালো ফল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এক যুদ্ধজাহাজে কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ রবার্টস তাঁর তথ্যে জানিয়েছিলেন, ইউরোপ যাওয়ার সময় জাহাজের ৮১ জনের ফ্লু হয়েছিল। সেসময় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সাড়া মেলে।