সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
নিজের জেলায় পোস্টিং না থাকার ফলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দূরে দূরে যেতে হয়। তাঁদের ছুটি নেওয়া নিয়েও নানা সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হয়। তাঁদের বেশিদিন মাতৃত্বকালীন ছুটি নিতে হয়। অন্য জেলায় পোস্টিং থাকার কারণে সংসার ও স্কুল-এই দুটি পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। অনেকেই বাড়ির কাছে পোস্টিং নিতে শিক্ষাদপ্তরে আবেদন করেন। বদলির আবেদনে জেরবার অবস্থা হয় শিক্ষামন্ত্রী ও তথা উচ্চপদস্থ কর্তাদের। সেই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ বের করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্যা অনুভব করে পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে গোটা শিক্ষক সমাজই স্বাগত জানাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ট্যুইটে লিখেছেন, আমরা আমাদের ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য গর্বিত। শিক্ষকরাই হলেন প্রধান অভিভাবক, যাঁদের সমাজে অপরিসীম অবদান রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে দেশগঠনের কাজে আগামীদিনে নেতৃত্ব দিতে পারে, তার দেখভালের দায়িত্ব শিক্ষকদেরই। সরস্বতী পুজোর সময়কেই আদর্শ সময় মনে করে শিক্ষকদের সম্মান জানিয়ে নিজের জেলায় পোস্টিংয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁর পরিবারের দিকে যেমন নজর দিতে পারবেন, তেমনি তাঁদের স্কুলেও ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে নজর দিতে পারবেন। আমি প্রত্যেক শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানাই।
ইতিমধ্যেই চালু থাকা আবেদনের ভিত্তিতে বদলি নিয়ে বিভিন্ন মহলেই অস্বচ্ছতার অভিযোগ রয়েছে। একটি চক্র সরকারকে অন্ধকারে রেখে মোটা টাকার বিনিময়ে বদলির ব্যবস্থা করছে বলে বেশ কিছু সংগঠন প্রায়ই অভিযোগ করে। এসটিইএ-র নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, শিক্ষামন্ত্রীও বাড়ির কাছে বদলির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মিউচুয়াল ট্রান্সফারের শুনানি দু’মাস আগে হলেও শিক্ষকরা বিভিন্ন জটিলতার জন্য যোগ দিতে পারছেন না। অন্যদিকে, বিশেষ বদলির নামে চলছে দুর্নীতি। তাই এই আশ্বাস কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে বদলিই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়া। সেটাই চালু করার দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, আবেদনের ভিত্তিতে বদলি প্রক্রিয়া দুর্নীতিমুক্ত এবং স্বচ্ছভাবে চালু হলেই সমস্যার সমাধান হবে। ডব্লুবিপিটিটিএ-এর রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, প্রাথমিকে নিজের জেলায় বদলির নিয়ম এখনই রয়েছে। তবে, অর্থের বিনিময়ে বদলির রেওয়াজ বন্ধ করতে হবে। পিবিএসএসবিকেএসের সভাপতি সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্যও দুর্নীতিমুক্ত বদলি প্রক্রিয়াকেই একমাত্র সমাধান বলেছেন। তৃণমূল শিক্ষা সেলের আহ্বায়ক জয়দেব গিরির দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদনের ফলে পাঁচ বছরের পুরনো শিক্ষকদের নিজের জেলায় এবং ১০ বছর বা তার বেশি পুরনো শিক্ষকদের নিজের মহকুমায় বদলির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটাই কার্যকর করা হবে।