শ্লেষ্মা ও বাতজ রোগ বৃদ্ধিতে কাজকর্মে ব্যাঘাত। গৃহাদি নির্মাণ বা সংস্কারে শত্রুর বাধা। ধর্মে মতি। ... বিশদ
তুলসীবেড়িয়া প্রাথমিক সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে শুধুমাত্র এই এলাকার বাসিন্দারাই নন, আসেন আশপাশের ১০-১২টি গ্রামের মানুষও। কারণ এই এলাকায় আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। সূত্রের খবর, আগে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোগীদের ভিড় লেগেই থাকত এখানে। ডাক্তাররা নিয়মিত আসতেন। সেসব এখন অতীত। হাতেগোনা কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী থাকলেও চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র এক। তিনি আবার রোজ আসনে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগে ভালোভাবে চললেও গত ১৪-১৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে এটি বেহাল হয়ে পড়ে। ঝোপঝাড়, আগাছায় ভরে উঠেছে এই চিকিৎসা কেন্দ্র। এ যেন সাপের আড্ডাঘরে পরিণত হয়েছে। রাত বাড়লেই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র জুড়ে শুরু হয়ে যায় অসামাজিক কাজকর্ম। বসে মদের আসর। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ নুর হোসেন বলেন, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থা ভীষণ খারাপ। মাত্র একজন দিদিমনি থাকেন। একজন ডাক্তার আছেন বটে, তবে ইচ্ছা হলে আসেন। তাঁর অভিযোগ, এখানে ওষুধও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। ফলে চণ্ডীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজের উপর আমাদের ভরসা করতে হয়। তুলসীবেড়িয়া সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১০-১২টি বেড থাকলেও তা তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষুদিরাম দোলাই বলেন, আগে প্রতিদিন ডাক্তার থাকত। ১০-১২টি গ্রামের বাসিন্দারা চিকিৎসার জন্য আসতেন। এখন কিছু হয় না বললেই চলে। ডাক্তার না এলে কম্পাউন্ডার রোগী দেখে ওষুধ দেন। আরেক বাসিন্দা কল্যাণী পালুইয়ের কথা, এই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র আমাদের লজ্জা। আগে রাতের দিকেও ডাক্তার, নার্স থাকতেন। পরিষেবা মিলত। এখন সেসবের বালাই নেই। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাদের দূরে নিয়ে যেতে হয় রোগীকে। তাহলে এমন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র রেখে লাভ কী?
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেহাল পরিষেবার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন এখানকার স্বাস্থ্যকর্মী পম্পিতা মণ্ডল। তিনি বলেন, এখানে নানা ধরনের সমস্যা আছে। পরিষ্কার না হওয়ায় জঙ্গল আগাছায় ভরে গিয়েছে। যখন তখন সাপখোপ বের হয়। তুলসীবেড়িয়া প্রাথমিক সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল পরিষেবার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উলুবেড়িয়া ২ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ পৌলমী প্রধান। তিনি বলেন, গত এক বছরে এখান থেকে পাঁচজন চিকিৎসককে তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে একজন চিকিৎসককে দিয়েই ব্লকে তুলসীবেড়িয়া ও বৃন্দাবনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। জঙ্গল, আগাছা সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তুলসীবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহসিন মোল্লা।