যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
একইভাবে জগৎপুর বাজারের কাছে এক পাঁঠার মাংসের বিক্রেতা বলেন, রবিবার গড়ে ১০ হাজার টাকার আশেপাশে বিক্রি হয়ে যায়। এদিন বেলা ১১টার মধ্যেই তা অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে। দমদম, জগৎপুর বলে নয়— ভোটের বাজারে অনেক জায়গাতেই বাঙালির মাংস কেনার ভিড় ছিল এদিন চোখে পড়ার মতো। কেষ্টপুর মোড়ের কাছে একটি পাঁঠার দোকানের এক ক্রেতা বলেন, বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া এবং টিভি দেখেই এদিন কাটাব গোটা পরিবার। তাই ক্রেতার ভিড় থাকলেও, মাংস কিনতে লাইন দিয়েছি। সকালে অবশ্য ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু, ইভিএম বিভ্রাটে ভোট গ্রহণ অনেক দেরি হয়েছে। তাই যতক্ষণে ভোটের লাইন আসবে, ততক্ষণে মাংস কেনা হয়ে যাবে— সেই ভেবেই এখানে লাইন দিয়েছি।
ভাটপাড়া বিধানসভারও বিভিন্ন দোকানে সকাল থেকেই দেখা গেল মাংসের দোকানে লম্বা লাইন। কেউ বা পাঁঠার মাংসের দোকানে আবার কেউ বা মুরগির মাংসের দোকানে—লাইনে দাঁড়িয়ে কিনতে আপত্তি নেই কারও। প্রচণ্ড গরমে মাংস থেকে দূরে থাকতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু, তার পরোয়া নেই সাধারণ মানুষের। তাই বেলা একটু বাড়তেই মাংসের দোকানগুলিতে লাইন বাড়তে শুরু করে। একটু বেলা বাড়তেই সমস্ত মাংস শেষ। আবার মাংস না পেয়েই হোক বা অন্য কোনও কারণে, কেউ কেউ লাইন দিলেন বিরিয়ানির দোকানে। চিকেন বিরিয়ানির সঙ্গে ৪০ ডিগ্রি গরমে সমানে টক্কর দিয়েছে মাটন বিরিয়ানিও। দুপুরের পর বিরিয়ানির দোকানেও বিরিয়ানি শেষ। এক কথায় ভোট উৎসবে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ যতই চড়েছে, ততই বেড়েছে খাদ্য রসিক বাঙালির পেট পুজোও।
একইসঙ্গে এদিন রাস্তাঘাটে লোক ছিল না। তাই অটো থেকে বাস, ট্যাক্সি প্রায় কিছুই নেই বলা চলে। এই অবস্থায় রিকশই অনেকাংশে ভরসা। কেষ্টপুর, দমদম এলাকার বহু জায়গাতেই এদিন সকাল থেকে রিকশর চাহিদা ছিল তুঙ্গে। কেষ্টপুরের এক রিকশ চালকের কথায়, অন্যদিন সারাদিন কাজ করেও ১৫০-২০০ টাকা রোজগার করতে পারিনি। কিন্তু, এদিন সকাল ১১টার মধ্যেই প্রায় ৪৫০ টাকা রোগজার করে ফেলেছি। সকালে স্ত্রী বলেছিল, ভোটে গণ্ডগোল হতে পারে, তাই বেরিও না। বলেছিলাম, গণ্ডগোল হলে চলে আসব। কিন্তু, তখনও ভাবতে পারিনি এত রোজগার এদিন করে ফেলব? যাই হোক একটু আগে বউকে ফোন করে জানিয়েছি, আজ মাংস কিনে নিয়ে বাড়িতে যাব। দুপুরে রান্না করে সকলে একসঙ্গে খাব। হাসতে হাসতেই বলছিলেন ওই রিকশ চালক।
দমদম এলাকার এক বিকশ চালক বলেন, অন্যদিনে সর্বাধিক ৫-৬টি ভাড়া এক বেলায় পাওয়া যায়। এদিন সকাল থেকে কয়েকঘণ্টাতেই ১২টা ভাড়া পেয়ে গিয়েছি। বিশেষ করে অটো-বাস না থাকাতেই এতটা ভাড়া মিলছে বলে তাঁর দাবি। পাশাপাশি ভোটাররা বাড়ি থেকে বুথ কেন্দ্র পর্যন্ত যাওয়ার জন্যও অনেকেই রিক্সাকে চাইছে, তাই ভাড়াও বেশি আসছে।
ভোটের জন্য রাস্তায় ঘোরার সময় দেখা গেল তেঘড়িয়া মোড়। গড়িয়া যাবেন বলে এক দম্পতি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, কাজের জন্য এদিকে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হয়। কিন্তু, তিনি গড়িয়ার দিককার ভোটার। তাই এদিন সকাল সকাল সেখানে গিয়ে ভোট দিয়ে ফিরে আসবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু, সকাল সাড়ে আটটা থেকে তেঘড়িয়া মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ৪৫ মিনিট হয়ে গেলেও, কোনও বাসের দেখা নেই। প্রায় একই কথা শোনা গেল কেষ্টপুর মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরও এক যাত্রীর কথায়। তিনি হাওড়া যাবেন ট্রেন ধরার জন্য। কিন্তু, কেষ্টপুর মোড়ে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনও যানবাহন পাননি।