পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
নয়ের দশক থেকে হাওড়ায় সব অপরাধীদের ছাপিয়ে ত্রাস হয়ে যায় রামুয়া। তার দলে প্রচুর ‘বাহুবলি’ ছিল। তাদের দিয়ে প্রোমোটারদের হুমকি দিয়ে তোলাবাজি চালাত সে। কোনও প্রোমোটার টাকা দিতে না চাইলে তখন বাইকের পিছনে চড়ে রামুয়া সেখানে পৌঁছাত। রামুয়া পৌঁছানো মানেই তার কপালে বিপদ ছিল। মুখের মধ্যে পিস্তল ঢুকিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ১৯৯৬ সালে খুন করা যুবকের মুণ্ডু নিয়ে ফুটবল খেলার ঘটনার পর বেশ কিছুদিন সে গা ঢাকা দিয়ে থাকে। এরপর পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এদিন সোদপুরেও চায়ের দোকানে, অটো চালকের মুখে রামুয়ার কাটা মুণ্ডু নিয়ে খেলার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গিয়েছে।
জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ফের সাম্রাজ্য বিস্তার শুরু করে। শুরু করে নতুন নতুন যুবকদের দলে নেওয়া। অন্য দলের যুবকদেরও ভাঙিয়ে সে নিজের দলে নিয়ে আসে। এইভাবেই গোটা শিবপুর এলাকার ‘ডন’ হয়ে ওঠে সে। কিন্তু, ২০০৩ সালে সে ফের গ্রেপ্তার হয়। এবার জেলে বসেই তার সাম্রাজ্য চালাতে শুরু করে। ছোট ছোট গোষ্ঠীতে তার ছেলেদের ভাগ করে দেয় সে। সেইমতো শিবপুর থেকে শুরু করে দাশনগর, বালি ও বেলুড়ে তোলাবাজি শুরু করে সে। শিবপুর থানার কাছেই কুণ্ডলবাগানে তার টালির চালার বাড়ি থেকেই সাম্রাজ্য চলতে শুরু করে।
আবার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের স্বমহিমায় নেমে পড়ে সে। ২০১১ সালে এক যুবককে খুন করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ওই যুবকের মাথা ও হাত পাওয়া যায় সাঁতরাগাছি ঝিলে। পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন বলে পুলিস মনে করছে। তারপর ফের রামুয়া পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার হয়। হাওড়া জেলেই তার ঠাঁই হয়। কিন্তু, জেলের মধ্যেই অপর এক বন্দিকে গুলি করে। ওই বন্দি প্রাণে বেঁচে গেলেও জখম হয়। তখন তাকে তড়িঘড়ি আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই ছিল সে।
এরপর জেল থেকে ছাড়া পেলেও খুন ও মাদক মামলায় চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিস ফের তাকে গ্রেপ্তার করে। নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ সে ছাড়া পায়। কিন্তু, ততদিনে হাওড়ায় তার বিকল্প গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই আর হাওড়ায় ফেরার ঝুঁকি নিতে পারেনি। আশ্রয় নেয় সোদপুরে। স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে সেখানে বসেই প্রোমোটারি করার পরিকল্পনা করছিল। এর আগে কিছু প্রোমোটারিও সে করেছে। কিন্তু, তার আগেই তার দেখানো পথেই প্রাণ দিতে হল তাকে।